মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিন্ন মতাবলম্বীদের উপর নিপীড়ন: বিতর্কের জন্ম
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি এবং ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগে বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, দেশটির সরকার বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের ভিসা বাতিল ও তাদের বিতাড়িত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনাগুলোকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, সালভাদরের নাগরিক কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার ঘটনা। যিনি এক দশকের বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন এবং বর্তমানে তাকে অবৈধভাবে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রশাসনিক ত্রুটির কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, মার্কিন কর্তৃপক্ষ অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে।
এছাড়াও, তুরস্কের শিক্ষার্থী রুমিসা ওজতুর্ককে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস থেকে আটক করে লুইসিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওজতুর্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের প্রতি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এই ঘটনার রেশ ধরে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকেও নিউ ইয়র্ক থেকে আটক করে বিতাড়িত করার জন্য লুইসিয়ানায় পাঠানো হয়েছে।
একই ধরনের অভিযোগে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির গবেষক বাদর খান সুরি, কোরিয়ান বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী ইউনসো চুং এবং আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসন নীতি কঠোর করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ভিন্নমত পোষণকারীদের কণ্ঠরোধ করতে এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বজায় রাখতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
একইসঙ্গে, এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করছে, যা তাদের পড়াশোনার পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে এবং ভবিষ্যতে এর আরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা