ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যের একজন বিচারক, যিনি প্রায় ২৩ বছর ধরে একটি ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আসল নাম হোসে এদুয়ার্দো ফ্রাঙ্কো dos রেইস, কিন্তু তিনি ‘এডওয়ার্ড অ্যালবার্ট ল্যানসেলট ডড ক্যানটারবেরি কেটারহাম উইকফিল্ড’ নামে পরিচিত ছিলেন।
সম্প্রতি, পরিচয়পত্র নবায়নের সময় তার আসল পরিচয় ধরা পরে। জানা গেছে, বিচারক রেইস ১৯৮০ এর দশকে এই ভুয়া নামে পরিচিত হওয়া শুরু করেন।
১৯৯৫ সালে তিনি বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই পরিচয় ব্যবহার করে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একসময় একটি সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেকে ব্রিটিশ অভিজাত পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি জন্মসূত্রে ব্রাজিলের নাগরিক হলেও ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ছিলেন।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, তিনি জন্মসনদ জালিয়াতি করেছেন। সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কলেজে ভর্তি হওয়ার সময়ও তিনি এই ভুয়া নামটি ব্যবহার করেন। যখন তার আসল পরিচয় উন্মোচিত হয়, তখন তিনি দাবি করেন, উইকফিল্ড নামে তার এক জমজ ভাই ছিলেন, যিনি শৈশবে এক ব্রিটিশ দম্পতির কাছে দত্তক গিয়েছিলেন।
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে পরিচয় জালিয়াতি ও ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাও পাওলো আদালত তার অবসরকালীন ভাতা স্থগিত করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে তিনি প্রায় ১ লক্ষ ৬৬ হাজার রিয়াল (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫২ লক্ষ টাকার সমান) পেনশন হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি এবং তাকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জবাবদিহিতার জন্য ডাকা হয়নি।
এই ঘটনাটি ব্রাজিলের বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা, যা জনসাধারণের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। কারণ, একজন বিচারকের এমন প্রতারণামূলক আচরণ বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমিয়ে দেয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান