চীনের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে আবারও কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে দেশটির পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
সোমবার ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি জানান, আগামী ৮ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখের মধ্যে চীন যদি তাদের শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহার না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ৯ এপ্রিল থেকে চীনের ওপর এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে।
একইসঙ্গে, চীন সরকারের সঙ্গে চলমান সব আলোচনাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়তে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা যাক। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্নভাবে প্রভাব পড়তে পারে।
চীন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য রয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একটি বড় বাজার।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই শুল্ক যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের আমদানি খরচও বাড়বে, যা দেশের মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে গেলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগও সৃষ্টি হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য কমে গেলে, অন্যান্য দেশ তাদের বাজার দখলের চেষ্টা করবে।
বাংলাদেশ যদি দ্রুত সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, তাহলে রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প, যা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভালো অবস্থানে রয়েছে, তারা এই পরিস্থিতিতে আরও সুবিধা পেতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনের ওপর এই নতুন শুল্ক আরোপ করা হলে, তা গত সপ্তাহে ঘোষিত ৩৪ শতাংশ শুল্ক এবং আগে থেকে বিদ্যমান ২০ শতাংশ শুল্কের অতিরিক্ত হবে।
যদিও খবর পাওয়া যাচ্ছিল যে ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করতে পারেন, তবে হোয়াইট হাউস এই খবরকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে, দেশের অর্থনীতিকে এই সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কৌশল তৈরি করতে হবে।
একইসঙ্গে, নতুন বাণিজ্য সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করতে হবে, যাতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান