1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
April 13, 2025 3:50 PM

নিউজিল্যান্ডের প্রকৃতিতে অশনি সংকেত! বিপদের মুখে বহু প্রজাতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Tuesday, April 8, 2025,

নিউজিল্যান্ডের পরিবেশের উপর প্রকাশিত একটি নতুন প্রতিবেদনে দেশটির জীববৈচিত্র্য এবং জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে গভীর উদ্বেগের চিত্র উঠে এসেছে। সেখানকার স্থানীয় প্রজাতিগুলোর বিলুপ্তি, জল দূষণ, এবং ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির বিষয়টি বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘আওয়ার এনভায়রনমেন্ট ২০২৫’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউজিল্যান্ডের স্বাদুপানির ৭৬ শতাংশ মাছ, ৬৮ শতাংশ পাখি, ৭৮ শতাংশ স্থলচর পাখি, ৯৩ শতাংশ ব্যাঙ এবং ৯৪ শতাংশ সরীসৃপ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় নিউজিল্যান্ডের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে।

এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভূমি ব্যবহার, দূষণ, আগ্রাসী প্রজাতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ জলের প্রধান সমস্যা হলো ‘ই-কোলাই’ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি। যা প্রাণী এবং মানুষের শরীরে পাওয়া যায় এবং গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে।

এই ব্যাকটেরিয়ার উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানকার কৃষি ও শহর এলাকার দূষণকে। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এক হাজারের বেশি স্থানে ভূগর্ভস্থ জলের নমুনা পরীক্ষা করে অর্ধেকের বেশি স্থানে পানীয় জলের গুণগত মান বজায় থাকেনি।

এছাড়াও, অতিরিক্ত নাইট্রেটের উপস্থিতিও উদ্বেগের কারণ, যা মূলত ব্যাপক হারে চাষাবাদ, বন নিধন এবং নগরায়নের ফল।

ওয়েলিংটনের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক ড. মাইক জয়ে এই প্রতিবেদন সম্পর্কে বলেছেন, এটি নিউজিল্যান্ডের পরিবেশের ক্রমাগত অবনতির একটি স্পষ্ট চিত্র।

তার মতে, ‘পরিষ্কার-সবুজ নিউজিল্যান্ড’ – এই ধারণাটি এখন একটি ভ্রান্ত ধারণা এবং সরকারের এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

প্রতিবেদনে একটি উদ্বেগের বিষয় হলো, ‘ওয়াইল্ডিং কোনিফার’ নামক এক প্রকার আগাছা গাছের বিস্তার। ধারণা করা হয়, প্রায় ২০ লক্ষ হেক্টর জমিতে এই গাছগুলো ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রতি বছর প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর করে এর বিস্তার বাড়ছে। সঠিক ব্যবস্থা না নিলে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভূমি, যার অধিকাংশই সংরক্ষিত এলাকা, এই গাছের দখলে চলে যেতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়টিও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ২০২৩ সালের ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েলের মতো চরম আবহাওয়ার কারণে নিউজিল্যান্ডের মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ এবং ৫ লাখ বাড়িঘর ইতোমধ্যে বন্যাপ্রবণ এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলে রয়েছে। এছাড়াও, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং দাবানলের ঝুঁকিও বাড়ছে।

তবে, এই প্রতিবেদনে আশার আলোও দেখা গেছে। যানবাহনের নির্গমন বিধিমালা কঠোর করার ফলে, বায়ুর গুণগত মানের উন্নতি হয়েছে।

মানুষ এখন কম দূষণকারী যানবাহন ব্যবহার করতে উৎসাহিত হচ্ছে, যা ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

নিউজিল্যান্ডের পরিবেশ বিষয়ক এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশেও জল দূষণ, বনভূমি ধ্বংস, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বাড়ছে।

সুতরাং, নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আমাদেরও পরিবেশ সুরক্ষায় আরও বেশি সচেতন হতে হবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT