নতুন সাদা বলের ক্যাপ্টেন হিসেবে হ্যারি ব্রুকের অধীনে বেন স্টোকস’কে ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের দলে ফেরানোর সম্ভাবনা এখনো খোলা রয়েছে।
ব্রুক জানিয়েছেন, বিশ্বমানের অলরাউন্ডার স্টোকস’কে দলে ফেরানো ‘বোকার মতো’ হবে যদি তাকে বিবেচনা করা না হয়।
ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক স্টোকসকে ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছিল, তবে তাঁর কাজের চাপ নিয়ে উদ্বেগের কারণে ব্রুককে দ্বৈত দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের বিশ্বকাপে সবশেষ ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছিলেন স্টোকস।
বিভিন্ন ইনজুরির কারণে তিনি এখন টেস্ট ক্রিকেটে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
তবে ব্রুক চান, ব্যস্ত সূচি সত্ত্বেও যদি সুযোগ থাকে, তাহলে স্টোকস যেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফিরে আসেন।
২৬ বছর বয়সী ব্রুক বলেন, ‘আসলে সময়টা কেমন হবে, সেটির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।
তবে সে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন এবং তাকে এড়িয়ে যাওয়াটা বোকামি হবে।’
নতুন অধিনায়ক জানিয়েছেন, জনি বেয়ারস্টো’রও দলে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার পর থেকে তিনি এখনো জাতীয় দলের বাইরে।
ব্রুক বলেন, ‘আমরা সবাই দেখেছি, বিশ্বের সেরা বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং বড় রান করতে সে কতটা পারদর্শী।
তাই তার দলে ফেরার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’
নিজের খেলার সূচি নিয়েও এখন থেকে পরিকল্পনা করতে হবে ব্রুককে।
কারণ তাঁর এই নিয়োগ অতীতের চেয়ে ভিন্ন।
এর আগে, ইয়ন মরগান ও জস বাটলারের মতো অধিনায়ক টেস্ট ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন।
ব্রুক বলেন, ‘কখনও কোনো সিরিজ মিস করাটা তেমন বড় কোনো বিষয় হবে না।’
আসন্ন শীতের ব্যস্ত সূচি নিয়ে তিনি বেশ উৎসাহিত।
নিউজিল্যান্ডে সীমিত ওভারের সিরিজ খেলার পর অ্যাশেজ, এরপর শ্রীলঙ্কা ও ভারতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে।
ব্রুক যোগ করেন, ‘অনেক ক্রিকেট খেলতে হবে, এবং আমি এর জন্য মুখিয়ে আছি।’
আগামী সেপ্টেম্বরে আয়ারল্যান্ডে একটি সংক্ষিপ্ত সফর রয়েছে, যেখানে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।
তবে ব্রুক নিজেকে এখনই সরিয়ে রাখতে চান না।
তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো খেলতে চাইব, কারণ এটি আমার প্রথম বছর।
দলের সবার সঙ্গে থাকতে এবং তাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে চাই।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিতে হচ্ছে ব্রুককে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়ার জন্য তিনি দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলারের (৫ লাখ ৯০ হাজার পাউন্ড) চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
এর ফলে টুর্নামেন্টের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ইনজুরি বা অসুস্থতা ছাড়া অন্য কোনো কারণে নাম প্রত্যাহার করলে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
ব্রুক বলেন, ‘নিয়ম তো নিয়মই।
যদি নিষিদ্ধ হই, তাহলে মেনে নিতে হবে।
আমি সম্পূর্ণভাবে ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং যদি এর জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে হয়, তবে তাই সই।’
ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার চেয়ে বেশি অর্থের বিষয়টি তিনি কল্পনা করতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্রুক বলেন, ‘এই মুহূর্তে একদমই না।
আমি শুধু ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে চাই, গত কয়েক বছর ধরে যেমনটা করে আসছি, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই এবং দলের জন্য ভালো কিছু করতে চাই।’
ইংল্যান্ড দলের খেলার ধরনে পরিবর্তন আসবে বলে জানানোর পাশাপাশি ব্রুক আগের অধিনায়কদের মতোই ‘আক্রমণাত্মক’ ক্রিকেট খেলার ওপর জোর দেন।
তিনি আরও জানান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট শুরুর আগে ইয়র্কশায়ারের হয়ে তিনি হয়তো এক-দুটি ম্যাচ খেলবেন, যার ফাইনাল দিনটি ২৫শে মে নির্ধারিত হয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, যা ব্রুকের অধিনায়ক হিসেবে প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট, এর চার দিন পরেই শুরু হবে।
ব্রুক যোগ করেন, ‘আমি সবসময় নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করব, শান্ত ও অবিচল থাকব, অনেক মজা করব এবং উপভোগ করব।
ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলাটা আমাদের সবার কাছে স্বপ্নের মতো।
১০ বছর বয়সে যদি আমি নিজেকে দেখতাম, তাহলে হয়তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেতাম।
ড্রেসিংরুমে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং মনে রাখতে হবে, আমরা এমন একটি কাজ করছি যা অনেকেই করতে চায়।’
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান