1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
April 22, 2025 1:12 AM

বাবার অবহেলা: ৬০ বছরেও কেন এত যন্ত্রণা?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Sunday, April 13, 2025,

প্রায় ষাটের কাছাকাছি বয়সেও বাবার উদাসীনতা আজও কষ্ট দেয়—এমনই এক মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন এক ব্যক্তি। তাঁর জীবনের গভীর ক্ষত, যা আজও তাঁকে তাড়া করে ফেরে। এই গল্পে মনোবিদদের পরামর্শও রয়েছে, যা আমাদের সমাজের অনেক মানুষের জন্য মূল্যবান হতে পারে।

ছেলেবেলায় তাঁর বাবা-মা’র বিয়ে হয়েছিল খুব অল্প বয়সে। তাঁদের দাম্পত্য জীবন বেশি দিন টেকেনি, তাঁরা আলাদা হয়ে যান। এরপর বাবার জীবনেও পরিবর্তন আসে, তিনি পুনরায় বিয়ে করেন এবং নতুন সংসার গড়েন। তাঁর মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয়, কিন্তু সেই সম্পর্কও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি, বরং গভীর দুঃখের জন্ম দেয়।

সেই সময় থেকেই বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে যায়। বাবার যেন তাঁর প্রতি কোনো মনোযোগ ছিল না। তিনি সবসময় নিজেকে একজন জ্ঞানী ব্যক্তি হিসেবে জাহির করতেন, আর অন্যদের ভুল প্রমাণ করতে ব্যস্ত থাকতেন।

অন্যদিকে, এই ব্যক্তির নিজের জীবনও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গেছে। তিনি হয়তো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তেমন পরিচিত নন, তবে পড়াশোনা করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন স্ব-কর্মসংস্থানকারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তিনি মনে করেন, তাঁর বাবা তাঁর কাজকে গুরুত্ব দেন না, বরং বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়গুলির প্রতিই তাঁর আগ্রহ বেশি। ব্যক্তিজীবনেও তিনি একা, বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে, সন্তানরা বড় হয়েছে।

বাবা তাঁর সন্তানদের প্রতিও কোনো আগ্রহ দেখাননি। কয়েক মাস আগে বাবার সঙ্গে শেষ দেখা হওয়ার পর তাঁর খুব খারাপ লেগেছিল। বাবার মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি, তিনি আজও তাঁর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ দেখান না। এই সম্পর্কের ভাঙনটা তিনি সারানোর চেষ্টা করতেও রাজি নন, কারণ এতে আবারও তিনি আঘাত পেতে পারেন।

এই বিষয়ে মনোবিদ ফিলিপা পেরির ভাষ্য অনুযায়ী, বাবা-মায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক। শৈশবে আমরা বাবা-মাকে আমাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে দেখি, তাঁদের ভালোবাসাই আমাদের আত্ম-মর্যাদাবোধ তৈরি করে। কিন্তু অনেক সময় বাবা-মায়েরা তাঁদের এই বিশাল ক্ষমতার কথা বুঝতে পারেন না।

এই ব্যক্তির ক্ষেত্রে, তাঁর বাবা হয়তো সবসময় তাঁর প্রতি উদাসীন ছিলেন। হয়তো তিনি তাঁর ছেলের জীবন ও কাজকে সেভাবে মূল্যায়ন করেননি। তাঁর মনে হয়েছে, তাঁর বাবার কাছে তাঁর কোনো গুরুত্ব নেই। এই ধরনের পরিস্থিতিগুলোতে মানুষের মনে হয়, তাঁদের অস্তিত্বের কোনো মূল্য নেই।

ফিলিপা পেরি আরও মনে করেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের ভেতরের ক্ষতকে বোঝা। বাবার কাছ থেকে ভালোবাসা না পাওয়ার কষ্ট হয়তো সহজে দূর করা যায় না, কিন্তু নিজের ভেতরের সেই শিশুকে ভালোবাসতে হবে। নিজেকে ভালোবাসার মাধ্যমে, নিজের প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করার মাধ্যমে এই কষ্ট কিছুটা হলেও কমানো যেতে পারে।

অন্যের কাছে স্বীকৃতির জন্য অপেক্ষা না করে, নিজের ভালো থাকার পথ নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে। জীবন আমাদের অতীত দ্বারা গঠিত হয়, তবে আমরা অতীতের দ্বারা আবদ্ধ নই। তাই, এমন সম্পর্কগুলো থেকে দূরে থাকা ভালো, যা আমাদের কষ্ট দেয়।

নিজের আত্ম-মর্যাদাকে গুরুত্ব দিয়ে এমন কিছু করুন, যা আপনাকে শান্তি এনে দেয়। তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT