শিরোনাম: “ইউ” সিরিজের সমাপ্তি: অভিনেতা পেন ব্যাজলি’র জীবন ও দর্শনের প্রতিফলন
পেন ব্যাজলি, যিনি “গসিপ গার্ল” এবং “ইউ” এর মতো জনপ্রিয় সিরিজে অভিনয় করেছেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন। নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজ “ইউ”-তে সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে অভিনয় করা এই অভিনেতা, তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিগত জীবন, এবং সমাজের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
আসন্ন পঞ্চম ও শেষ সিজনে “ইউ” সিরিজের সমাপ্তি হতে চলেছে, যা তাঁর ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অবসান ঘটাবে।
সাক্ষাৎকারে, ব্যাজলি জানিয়েছেন যে, জো গোল্ডবার্গ নামক একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে অভিনয় করাটা তাঁর জন্য কেমন ছিল। তিনি বলেন, এই চরিত্রটি তাঁকে অনেক নতুন উপলব্ধির দিকে নিয়ে গেছে। ভালোবাসার ধারণা, পুরুষত্ব, এবং সহিংসতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে তিনি নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন।
চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করতে গিয়ে তিনি নিজের জীবনের অনেক ঘটনার সঙ্গে এর মিল খুঁজে পেয়েছেন।
“ইউ”-এর শুটিংয়ের সময় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও কিছু পরিবর্তন আসে। এই সময়েই তিনি বিয়ে করেন এবং সন্তানের বাবা হন। তিনি মনে করেন, গোল্ডবার্গের চরিত্র তাঁকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে, কারণ এই চরিত্রটি তাঁকে অনেক বিষয়ে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, “আসলে, এই চরিত্রটি আধুনিক সমাজে প্রেম এবং পুরুষত্ব সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলোর একটি প্রতিচ্ছবি।”
অভিনেতা হিসেবে খ্যাতির সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, সে সম্পর্কেও ব্যাজলি কথা বলেছেন। তিনি জানান, খ্যাতির কারণে তাঁর জীবনে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল, যা তিনি একসময় অনুভব করেছিলেন।
তাঁর শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি জানান, কীভাবে তিনি বডি ডিসমরফিয়ার শিকার হয়েছিলেন। তিনি জানান, একসময় নিজের শরীরকে ঘৃণা করতেন এবং অন্যরকম দেখতে চাইতেন।
পেন ব্যাজলি তাঁর বিশ্বাসের বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি বাহাই ধর্মানুসারে বিশ্বাসী এবং তাঁর জীবনের এই দিকটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, আধ্যাত্মিকতা তাঁকে জীবনের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সাহায্য করেছে।
তিনি নিয়মিত ধ্যান করেন এবং তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।
সাক্ষাৎকারে, ব্যাজলি “ইউ” সিরিজের যৌন দৃশ্যগুলো নিয়েও তাঁর আপত্তির কথা জানান। তিনি বলেন, “যৌন দৃশ্যগুলো সাধারণত দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য ব্যবহার করা হয়, কিন্তু বাস্তবে যৌনতার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।”
তাঁর মতে, যৌন দৃশ্যগুলোতে সম্পর্কের গভীরতা এবং পারস্পরিক সম্মানের অভাব থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাজলি তাঁর উদ্বেগের কথা জানান। তিনি মনে করেন, বর্তমানে বিভেদ আরও বাড়ছে, তাই মানুষের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
পেন ব্যাজলি বর্তমানে তাঁর ৪০ এর কোঠায় পৌঁছেছেন। তাঁর আসন্ন প্রজেক্ট এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তিনি খুবই আশাবাদী। তিনি মনে করেন, “ইউ” সিরিজের সমাপ্তি তাঁর জন্য একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান