মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন ২০২৬ সালের সিনেট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডেমোক্রেটদের মধ্যে প্রার্থী বাছাই এবং নির্বাচনী কৌশল নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে সিনেট আসনে জয়লাভের জন্য দলটির সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ।
দলটির অভ্যন্তরে আদর্শগত বিভেদ এবং ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খবর অনুযায়ী, ডেমোক্রেটরা এমন কিছু রাজ্যেও প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে, যেখানে তাদের জেতার সম্ভাবনা কম।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হলো, তারা কোন আদর্শের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনে লড়বে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভোটারদের কাছে কীভাবে নিজেদের তুলে ধরবে।
অনেক রাজ্যে ডেমোক্রেট সিনেটরদের অবসর গ্রহণও দলটির জন্য একটি বড় ধাক্কা। কারণ এর ফলে রিপাবলিকানরা (যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল দল) সহজেই আসনগুলো নিজেদের দখলে নিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট (সংসদের উচ্চকক্ষ) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে আইন প্রণয়ন এবং নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সিনেটরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের মতো, সিনেটররাও তাদের রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ডেমোক্রেটদের জন্য সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এমন কিছু রাজ্যে, যেখানে তারা অতীতে খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকানদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজ্যগুলোতেও এবার তারা লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, প্রতিটি আসনে একজন করে ডেমোক্রেট প্রার্থী দেওয়া। উদাহরণস্বরূপ, সাউথ ক্যারোলিনায় ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী জেইমি হ্যারিসন বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেও রিপাবলিকান প্রার্থীর কাছে হেরে যান।
নির্বাচনে ভালো ফল করার জন্য ডেমোক্রেটদের সামনে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তাদের একদিকে যেমন রিপাবলিকানদের মোকাবিলা করতে হবে, তেমনি ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে হবে।
অনেক ভোটার ডেমোক্রেটদের আদর্শ এবং তাদের নীতি সম্পর্কে সন্দিহান। তাই, দলটিকে এখন নতুন করে নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় তৈরি করতে হচ্ছে।
দলীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ডেমোক্রেট নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তারা এমন প্রার্থী খুঁজছেন, যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের (যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট) নীতির বিরোধিতা করতে এবং দলের পক্ষে জোরালোভাবে কথা বলতে পারেন।
মিশিগান অঙ্গরাজ্যের একজন সম্ভাব্য প্রার্থী আব্দুল এল-সাঈদ মনে করেন, ভোটারদের মধ্যে হতাশা ও অনাগ্রহ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডেমোক্রেটদের মূল বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে হবে।
অন্যদিকে, রিপাবলিকানরাও তাদের নির্বাচনী প্রচারণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা অর্থনৈতিক বিষয় এবং ট্রাম্পের প্রতি ডেমোক্রেটদের দুর্বলতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের নির্বাচন ডেমোক্রেটদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। তারা যদি তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে পারে এবং ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে, তবে নির্বাচনে ভালো ফল করা সম্ভব।
তবে, এর জন্য তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন