মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে বড় ধরনের পরিবর্তনের একটি প্রস্তাবনা নিয়ে বর্তমানে আলোচনা চলছে। দেশটির গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে।
প্রস্তাবিত পরিবর্তনের খসড়া অনুযায়ী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাঠামোতে বড় ধরনের রদবদল আনা হতে পারে, যা বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
খসড়া প্রস্তাবনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিধিকে নতুন করে সাজানোর কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের কিছু অংশে কূটনৈতিক কার্যক্রম কমানো, জলবায়ু পরিবর্তন, শরণার্থী, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং নারী অধিকার বিষয়ক বিভাগগুলোতে কাটছাঁট উল্লেখযোগ্য।
প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন হলে, এটি হবে ১৭৮৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে বড় পুনর্গঠনগুলোর মধ্যে একটি। এছাড়া, জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা বিষয়ক ব্যুরো বিলুপ্ত করারও প্রস্তাব রয়েছে।
যদি এই প্রস্তাব কার্যকর হয়, তবে এর ফলে কানাডায় মার্কিন কূটনৈতিক কার্যক্রমেও কাটছাঁট হতে পারে। সামগ্রিকভাবে, এই খসড়া যুক্তরাষ্ট্রের বহুপাক্ষিক বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতি অঙ্গীকারের একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নির্দেশ করে।
প্রস্তাবনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইন্দো-প্যাসিফিক, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরেশিয়া—এই চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করার কথা বলা হয়েছে। তবে, সাব-সাহারান আফ্রিকার কিছু দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করারও প্রস্তাব রয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কিছু সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, প্রকাশিত খবরগুলো অতিরঞ্জিত হতে পারে।
তবে, পরিবর্তনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা এখনো চলছে।
এই পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের ভূমিকা ও উন্নয়ন কর্মসূচিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা, তা এখন দেখার বিষয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচিগুলোতে পরিবর্তন আনে, তবে এর প্রভাব অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেও পড়তে পারে।
যেহেতু বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, তাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে যেকোনো পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
এই প্রস্তাবনার চূড়ান্ত রূপ কী হবে এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কেমন হবে, সেদিকে এখন সকলের দৃষ্টি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সম্ভাব্য পুনর্গঠন বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং উন্নয়ন সহযোগিতায় নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান