যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং এলজিবিটিকিউ+ বিষয়ক পাঠ্যক্রম নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি, একটি মামলায় অভিভাবকদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে সন্তানদের এলজিবিটিকিউ+ বিষয়ক পাঠ থেকে বিরত রাখার অধিকার নিয়ে আলোচনা চলছে।
মন্টগোমারি কাউন্টি, মেরিল্যান্ডের একটি ঘটনার সূত্রে এই বিতর্কের সূত্রপাত।
মামলার মূল বিষয় হলো, অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো পাঠ্যক্রমের কিছু অংশ, বিশেষ করে এলজিবিটিকিউ+ সম্পর্কিত বিষয়গুলোর প্রতি আপত্তি জানালে, তাদের সন্তানদের সেই পাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়ার অধিকার পাবেন কিনা। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ধর্মীয় অনুভূতির কারণে তারা চান তাদের সন্তানেরা এমন কিছু বিষয় শিখুক যা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী নয়।
অন্যদিকে, স্কুল বোর্ড জানিয়েছে, যদি এই ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়, তবে তা পাঠদান ব্যবস্থায় জটিলতা তৈরি করবে। তাদের মতে, এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে ক্লাসরুমে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া, তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, পাঠ্যক্রমের এলজিবিটিকিউ+ বিষয়ক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের সকল মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করা।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে এই বিষয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে। রক্ষণশীল বিচারপতিরা অভিভাবকদের প্রতি সহানুভূতি দেখালেও, উদারপন্থী বিচারপতিরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিচারপতিদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, অল্পবয়সী শিশুদের উপর শিক্ষকের কথার প্রভাব বেশি থাকে। তারা শিক্ষকদের বক্তব্যকে সহজে গ্রহণ করতে পারে এবং অভিভাবকদের চেয়ে শিক্ষকদের কথাকে বেশি গুরুত্ব দিতে পারে।
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতিদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদও হয়েছে। “আঙ্কেল ববি’স ওয়েডিং” নামক একটি বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে বিচারপতি স্যামুয়েল আলিতো এবং বিচারপতি সোনিয়া সোতোমায়োরের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়।
এই বইটি শিশুদের মধ্যে সমকামিতা বিষয়ক ধারণা দেয় কিনা, তা নিয়ে তাদের মধ্যে বিতর্ক হয়।
এই ধরনের বিতর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মামলায় প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের এই বিভেদ ভবিষ্যতে শিক্ষা, পারিবারিক অধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে।
এই মামলার রায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং সমাজে গভীর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন