টুনা মাছ: খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি
মাছ বাঙ্গালীদের একটি প্রধান খাদ্য। বিশেষ করে টুনা মাছ প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস।
কিন্তু এই মাছ খাওয়ার বিষয়ে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যা আমাদের সকলের জানা দরকার। টুনা মাছে পারদের (মার্কারি) উপস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
পারদ কী এবং কেন এটি উদ্বেগের কারণ?
পারদ একটি ভারী ধাতু, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এটি সাধারণত মাছ সহ বিভিন্ন খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে।
টুনা মাছ যেহেতু খাদ্য শৃঙ্খলের উপরের দিকে থাকে, তাই এদের শরীরে অন্যান্য মাছের তুলনায় পারদের পরিমাণ বেশি থাকে। মানুষের শরীরে পারদ জমা হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
পারদ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
টুনা মাছে পারদের মাত্রা
বিভিন্ন ধরনের টুনা মাছে পারদের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
টুনা খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের সপ্তাহে ২-৩ বার মাছ খাওয়া উচিত, যা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে। তবে, যে সব মাছে পারদের পরিমাণ বেশি, সেগুলো খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
কাদের জন্য সতর্কতা জরুরি?
গর্ভবতী মহিলা, বুকের দুধ খাওয়ানো মা এবং ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে টুনা মাছ খাওয়ার বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, পারদ তাদের শরীরে প্রবেশ করে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করার বিষয়
বাংলাদেশে টুনা মাছ খুব বেশি প্রচলিত না হলেও, বিভিন্ন সুপারমার্কেট ও বাজারে এটি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে অন্যান্য অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মাছ পাওয়া যায়, যেমন – রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাবদা ইত্যাদি।
এসব মাছ টুনা মাছের চেয়ে অনেক বেশি সহজলভ্য এবং অনেক ক্ষেত্রে পারদের ঝুঁকিও কম থাকে। তাই, খাদ্য তালিকায় মাছ যোগ করার সময় স্থানীয় মাছগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে।
উপসংহার
টুনা মাছ পুষ্টিগুণে ভরপুর, তবে এতে পারদের উপস্থিতির কারণে এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা প্রয়োজন। আপনার খাদ্য তালিকায় টুনা যোগ করার আগে এর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জেনে নিন।
যদি আপনি গর্ভবতী হন, বুকের দুধ খাওয়ান অথবা আপনার সন্তান ছোট হয়, তবে টুনা খাওয়ার বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সচেতনতা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস জরুরি।
তথ্য সূত্র: Healthline