আত্ম-স্বীকৃতি: নিজের ভালোত্বের প্রতিচ্ছবি
আমরা সবাই নিজেদের সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে চাই।
আমাদের ভেতরের এই আকাঙ্ক্ষা থেকেই জন্ম নেয় আত্ম-স্বীকৃতির ধারণা। যখন কোনো ঘটনা আমাদের আত্ম-মর্যাদাকে আঘাত করে, তখন আমরা নিজেদের ভালো দিকগুলো মনে করে সেই আঘাত থেকে মুক্তি পেতে চেষ্টা করি।
মনোবিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াকে আত্ম-স্বীকৃতি তত্ত্ব (self-affirmation theory) হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। ১৯৮০-এর দশকে ক্লড স্টিল এই তত্ত্বের জনপ্রিয়তা আনেন।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আত্ম-স্বীকৃতি হলো নিজের ভালো দিকগুলো সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলা। যেমন, “আমি একজন ভালো মানুষ”, “আমি আমার কাজে দক্ষ” – এই ধরনের কথাগুলো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।
নিয়মিত আত্ম-স্বীকৃতি চর্চা করলে আমরা আমাদের ভেতরের শক্তিকে আরও ভালোভাবে অনুভব করতে পারি। এতে আমাদের আত্ম-মূল্য বৃদ্ধি পায়, এবং কোনো কঠিন পরিস্থিতিতেও আমরা সহজে মানিয়ে নিতে পারি।
বর্তমান সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে, এবং আত্ম-স্বীকৃতি সেই ক্ষেত্রে একটি সহায়ক উপায় হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, আত্ম-স্বীকৃতি কোনো মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শের বিকল্প নয়।
যদি কারো মধ্যে আত্ম-বিশ্বাসের অভাব বা হতাশা দেখা যায়, তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উচিত। তাঁরা আমাদের সমস্যাগুলো বুঝতে এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবন যাপনে সাহায্য করতে পারেন।
আত্ম-স্বীকৃতি তৈরি করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। নিজের বিশ্বাস ও লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে ইতিবাচক বাক্য তৈরি করা উচিত।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী হতে চান, তবে এমন কিছু বাক্য তৈরি করতে পারেন যা আপনার ভেতরের দুর্বলতাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে। যেমন, “আমি আমার দক্ষতা ও প্রতিভার ওপর বিশ্বাস রাখি।
আত্ম-স্বীকৃতিকে দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করা যেতে পারে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বা রাতে ঘুমানোর আগে কিছু সময় নিয়ে নিজের জন্য ইতিবাচক কথা বলা যেতে পারে।
এছাড়াও, দিনের অন্য সময়েও যখন প্রয়োজন মনে হয়, তখন আত্ম-স্বীকৃতি অনুশীলন করা যেতে পারে। ধৈর্য ধরে নিয়মিত এই চর্চা করলে ধীরে ধীরে এর ফল পাওয়া যায়।
এই বিষয়গুলো অনুসরণ করে, আমরা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আত্ম-স্বীকৃতির ইতিবাচক প্রভাব অনুভব করতে পারি। আত্ম-স্বীকৃতি আমাদের আত্ম-মর্যাদাবোধ বাড়াতে, মানসিক চাপ কমাতে এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: হেলথলাইন