মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন প্রস্তাবিত আইনের কারণে দেশটির বিভিন্ন অলাভজনক সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। এই আইনটি পাস হলে, সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সংগঠনগুলোর ট্যাক্স-মুক্ত সুবিধা বাতিল করা সহজ হবে।
সম্প্রতি, মার্কিন কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে এই সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপিত হয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার বিরোধীদের দমন করার ধারাবাহিক চেষ্টারই অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত এই আইনে বলা হয়েছে, ট্রেজারি সেক্রেটারি, অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী, কোনো অলাভজনক সংস্থাকে ‘সন্ত্রাসে সমর্থনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের ট্যাক্স-মুক্ত সুবিধা স্থগিত করতে পারবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন এবং সিয়েরা ক্লাবের মতো ২০০টির বেশি সংস্থা এর বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছে। তাদের মতে, এই আইনটি প্রেসিডেন্টকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের সুযোগ করে দেবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আইনের মাধ্যমে সরকার তার ক্ষমতাকে অপব্যবহার করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো সংস্থা বিদেশি ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করে, তবে তাদেরও এই আইনের আওতায় আনা হতে পারে।
এছাড়া, যারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে অনুদান পায়, তাদের ক্ষেত্রেও জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
ইতিমধ্যেই, ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন সময়ে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নিশানা করেছেন। এর আগে, তিনি ডেমোক্রেটদের তহবিল সংগ্রহকারী একটি প্ল্যাটফর্ম, অ্যাক্টব্লু-এর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এছাড়া, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যাক্স-মুক্ত সুবিধা বাতিলেরও হুমকি দিয়েছিলেন, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়টি তার নীতি অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হয়নি।
আইনটির সমালোচকরা বলছেন, এতে ন্যায়বিচারের অভাব রয়েছে। এই আইনে, ট্রেজারি সেক্রেটারিকে একচেটিয়া ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এবং কোনো বিচারকের সামনে যাওয়ার আগেই একটি সংস্থার ট্যাক্স-মুক্ত সুবিধা বাতিল করা হতে পারে।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অধিকার এবং আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করছেন। তবে, অলাভজনক সংস্থাগুলো তাদের আইনি পরামর্শকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে এবং সম্ভাব্য নিরীক্ষণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তারা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ তাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
এই বিলটি এখনো কংগ্রেসে চূড়ান্তভাবে পাস হয়নি। তবে, আইনটি পাস হলে, অলাভজনক সংস্থাগুলো এর বিরুদ্ধে সিনেটে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যদি এটি আইনে পরিণত হয়, তবে এর ফলস্বরূপ অনেক সংস্থাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন