গাজায় ত্রাণ বিতরণের কেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলা, খাদ্য সংকটে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
গাজায় মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ত্রাণ বিতরণের কেন্দ্রে খাবার সংগ্রহের জন্য হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মানুষের ভিড়, যা ভয়াবহ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। ক্ষুধার্ত মানুষগুলো ত্রাণের আশায় ছুটে আসলেও ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ে।
মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, যার ফলস্বরূপ সেখানে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের খাদ্য বিতরণ সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম চালাতে না পারায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ বেড়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল জরুরি ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিলেও, বিতরণের দায়িত্বে ছিল গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ), যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত একটি সংস্থা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাফাহ শহরে ত্রাণের জন্য আসা মানুষের সংখ্যা ছিল বিপুল। নারী, পুরুষ ও শিশু সহ সবাই খাবার সংগ্রহের জন্য উদগ্রীব ছিল। এই সময় ইসরায়েলি সৈন্যরা তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়।
ঘটনার জন্য ইসরায়েল হামাসকে দায়ী করেছে। অন্যদিকে হামাস ইসরায়েলের ওপর মানবিক সংকট তৈরি করার অভিযোগ এনেছে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অসহযোগিতার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গাজায় কর্মরত সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, হামাসের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণে কোনো প্রকার বাধা দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং, গাজার বাসিন্দাদের চরম খাদ্য সংকটই এই পরিস্থিতির মূল কারণ। গাজার প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে।
স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করেছেন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করার পেছনে ইসরায়েলের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। তাদের ধারণা, ইসরায়েল সম্ভবত গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করতে চাইছে। এই অঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করে তাদের দক্ষিণে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেকে মনে করেন, এটি গাজার ফিলিস্তিনিদের সম্পূর্ণরূপে বিতাড়িত করার একটি কৌশল হতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মানবিক সাহায্য সংস্থা ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতিকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা