যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মকালে সময় পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কিছু বিষয়
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে গ্রীষ্মকালে দিনের আলো বেশি পাওয়ার জন্য ঘড়ি এক ঘণ্টা এগিয়ে দেওয়া হয়। এই সময় পরিবর্তনের রীতিকে বলা হয় ‘ডেলাইট সেভিং টাইম’ বা ডিএসটি। তবে, বাংলাদেশে এই ধরনের সময় পরিবর্তনের কোনো চল নেই। ডিএসটি’র কারণে মানুষের ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন আসে, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, ডিএসটি’র সময়কালে মানুষের শরীরে কিছু গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক ডিএসটি’র স্বাস্থ্য বিষয়ক কিছু দিক এবং আমাদের জন্য এর থেকে কি শেখার আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিএসটি’র কারণে মানুষের স্বাভাবিক ঘুমের ছন্দ বা সার্কাডিয়ান রিদম (circadian rhythm) ব্যাহত হয়। আমাদের মস্তিষ্কের একটি অভ্যন্তরীণ ঘড়ি আছে, যা সূর্যের আলো ও অন্ধকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলে। এই সার্কাডিয়ান রিদম ঘুমের সময় এবং জেগে থাকার সময় নির্ধারণ করে। ডিএসটি’র কারণে যখন ঘড়ি এক ঘণ্টা এগিয়ে দেওয়া হয়, তখন এই স্বাভাবিক ছন্দপতন ঘটে। ফলে ঘুমের অভাব, ক্লান্তি এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ডিএসটি’র শুরুতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ডিএসটি শুরু হওয়ার পরের দিন হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং এর পরের দুই দিন স্ট্রোকের ঝুঁকিও কিছুটা বাড়তে পারে। এছাড়া, ঘুমের অভাবের কারণে গাড়ির দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়তে পারে, যা জীবনহানির কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা রাতের শিফটে কাজ করেন বা যাদের ঘুমের সমস্যা আছে, তাদের জন্য ডিএসটি’র এই পরিবর্তন আরও কঠিন হতে পারে। ঘুমের অভাব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্মৃতিভ্রংশতার মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
তাহলে, এই পরিস্থিতি থেকে আমরা কি শিখতে পারি? যদিও বাংলাদেশে ডিএসটি’র প্রচলন নেই, তবুও ঘুমের সময় পরিবর্তনের এই ধারণা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের জীবনযাত্রায়ও ঘুমের সময় পরিবর্তন হতে পারে। যেমন, উৎসবের সময় বা কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে রাত জাগার কারণে ঘুমের অভাব হতে পারে। তাই, ঘুমের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিএসটি’র মতো আকস্মিক পরিবর্তনের পরিবর্তে ধীরে ধীরে ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন আনা ভালো। আমাদের মনে রাখতে হবে, পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য। ঘুমের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে পারি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস