ন্যাটো জোটের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনাস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর ইউরোপীয় নেতারা জোটের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় নেতারা এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প আবারও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ন্যাটো সদস্য দেশগুলো যদি তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র জোটের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা খাতে কয়েক বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের উপর কোনো আক্রমণ হয়, তাহলে সামরিক জোটটি তাদের রক্ষা করতে আসবে কিনা, তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, “আমরা অনুগত ও বিশ্বস্ত মিত্র।” তিনি আরও যোগ করেন, ফ্রান্স “একই রকম প্রত্যাশা করতে পারে।
লাটভিয়ার ন্যাটো রাষ্ট্রদূত মারিস রিয়েকস্টিন জোর দিয়ে বলেন, সামরিক জোটটি আন্তঃআটলান্টিক নিরাপত্তা ইস্যুগুলো মোকাবিলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে এখনো বিদ্যমান।
তিনি রাশিয়া সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত তার দেশের প্রতিরক্ষা ব্যয়ের প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাল্টিক রাষ্ট্রটি গত মাসে ঘোষণা করেছে যে তারা আগামী বছর তাদের জিডিপির ৪ শতাংশ এবং পরবর্তীতে ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে চায়।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর, যারা কয়েক দশক ধরে প্রতিরক্ষা খাতে কম অর্থ ব্যয় করেছে, সেই দেশগুলো তাদের নিরাপত্তা জোরদার এবং ইউক্রেনকে সমর্থন করার উপায় খুঁজছে।
বৃহস্পতিবার, ইইউ নেতারা বাজেট বিধিনিষেধ শিথিল করার বিষয়ে সম্মতি দেন, যাতে আগ্রহী দেশগুলো সামরিক ব্যয় বাড়াতে পারে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, তার দেশ ন্যাটো-এর লক্ষ্য দ্রুত অর্জনের জন্য প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াবে।
তবে তিনি নির্দিষ্ট করে জানাননি যে ইউরোজোনের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি কবে নাগাদ জিডিপির ২ শতাংশ সামরিক ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে।
উল্লেখ্য, গত বছর স্পেন তাদের জিডিপির ১.২৮ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করেছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আগের সমর্থনের থেকে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিয়ে জোটের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা গ্যারান্টি প্রসারিত করা “স্থিতিশীল, দীর্ঘস্থায়ী এবং কার্যকর নিরাপত্তা” নিশ্চিত করবে।
অন্যদিকে, ন্যাটো সদস্য হিসেবে সুইডেন তাদের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করেছে।
সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বার্ষিকীর কথা উল্লেখ করেন।
তবে তারা ট্রাম্পের মন্তব্যগুলো সরাসরি উল্লেখ করেননি, বরং “আরও সুরক্ষিত সুইডেন এবং শক্তিশালী ন্যাটো”-র ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস