যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে অভিবাসন আটকের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই: ডেনভারের আদালতের শুনানি
যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য একটি আবেদন নিয়ে ডেনভারের একটি ফেডারেল আদালতে শুনানি চলছে। ট্রাম্প প্রশাসনের একটি নীতির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে স্কুলসহ আরও কিছু ‘সংবেদনশীল’ স্থানে অভিবাসন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে শিথিলতা আনা হয়েছে।
ডেনভার পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছে, যাতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের স্কুলে গ্রেপ্তারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তাদের যুক্তি হলো, নতুন নীতির কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে এবং অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দেওয়া, অভিবাসন বিষয়ক উদ্বেগের কারণে শিক্ষকদের একাডেমিক বিষয় থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে এবং যারা স্কুলে আসতে পারছে না, তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতেও সমস্যা হচ্ছে।
আদালতে পেশ করা আবেদনে বলা হয়েছে, আগে ‘সংবেদনশীল স্থান’ হিসেবে পরিচিত স্থানগুলোতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের কোনো অভিযান চালাতে হলে সাধারণত কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন হতো। তবে জরুরি অবস্থা বা জাতীয় নিরাপত্তার মতো কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, অভিবাসন বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখন তাদের ‘বিবেচনাবোধ’ এবং ‘সাধারণ জ্ঞান’ ব্যবহার করে সরাসরি গ্রেপ্তার করতে পারবেন, এক্ষেত্রে তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, যদিও নতুন নীতি আসার আগে অভিবাসন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার খুব একটা ঘটেনি। তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে স্কুলগুলোতে মাত্র দুটি এবং স্কুলের আশেপাশে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে, নতুন নীতি কার্যকর হওয়ার পর এখন পর্যন্ত স্কুলে কোনো গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেনি।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডেনভার স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ক্ষতির প্রমাণ দিতে পারেনি এবং তাদের এই মামলা করার কোনো অধিকার নেই।
আগের এক রায়ে মেরিল্যান্ডের একটি আদালত কোয়েকার সম্প্রদায়ের উপাসনালয়গুলোতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সেই রায়টি শুধুমাত্র ঐ নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য প্রযোজ্য ছিল।
ট্রাম্প-নিযুক্ত বিচারক ড্যানিয়েল ডোমেনিকো কবে নাগাদ এই মামলার রায় দেবেন, তা এখনো জানা যায়নি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস