ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী বোঝাই চারটি নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, নিখোঁজ কয়েক’শ
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, ইয়েমেন ও জিবুতির উপকূলে অভিবাসী বহনকারী চারটি নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ২ জন মারা গেছে এবং এখনো ১৮৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। শুক্রবার (আজ) আইওএমের মুখপাত্র এ তথ্য জানান।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইয়েমেনের কাছে দুটি নৌকা ডুবে যায়। নৌকাডুবির ঘটনা থেকে ২ জন ক্রু সদস্যকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে, ১৮১ জন অভিবাসী ও ৫ জন ইয়েমেনি ক্রু এখনো নিখোঁজ রয়েছে। আইওএমের ইয়েমেন মিশনের প্রধান আব্দুসাত্তর এশোয়েভ জানান, নৌকায় থাকা অধিকাংশ যাত্রীই ছিলেন ইথিওপিয়ার নাগরিক। এছাড়া, ৫ জন ইয়েমেনি ক্রু সদস্য ছিলেন। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৭ জন নারী ছিলেন।
আব্দুসাত্তর এএফপিকে বলেন, “আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তবে, আমরা আশঙ্কা করছি, হয়তো আর কাউকে জীবিত পাওয়া যাবে না।”
একই সময়ে আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ জিবুতির কাছেও আরও দুটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আইওএমের মুখপাত্র। নৌকাডুবিতে ২ জন অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নৌকায় থাকা অন্যদের জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পরও ইয়েমেন এখনো পূর্ব আফ্রিকা ও আফ্রিকার শিং থেকে আসা অভিবাসী ও শরণার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। এই পথ ব্যবহার করে তারা কাজের সন্ধানে উপসাগরীয় দেশগুলোতে পাড়ি জমায়। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই পথ পাড়ি দেয়।
অভিবাসীদের ইয়েমেন পৌঁছানোর জন্য প্রায়ই সমুদ্রপথে মানব পাচারকারীদের দ্বারা বিপজ্জনক ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌকায় করে লোহিত সাগর অথবা এডেন উপসাগর পাড়ি দিতে হয়।
আইওএমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রায় ৯৭,২০০ জন অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছিল, যা ২০২১ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি। তবে, জলসীমায় টহল জোরদার হওয়ায় গত বছর এই সংখ্যা কমে প্রায় ৬১,০০০-এ দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, শুধু ২০২৪ সালেই এই পথে ৫৫৮ জন মারা গেছে। জানুয়ারিতে ইয়েমেনের কাছে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ২০ জন ইথিওপিয়ান নিহত হয়েছিল। গত এক দশকে এই পথে অন্তত ২,০৮২ জন নিখোঁজ হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬৯৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা গেছে। বর্তমানে ইয়েমেনে প্রায় ৩৮০,০০০ অভিবাসী রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা