প্যারিসের বিখ্যাত পম্পিদু সেন্টার, যা আধুনিক শিল্পের এক উজ্জ্বল কেন্দ্র, সংস্কারের জন্য বন্ধ হতে যাচ্ছে।
আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ বছরের জন্য এর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এই সময়ের মধ্যে, অত্যাধুনিক এই ভবনের ব্যাপক সংস্কার করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে এসবেসটস অপসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
এই সংস্কারের জন্য প্রায় ২৬২ মিলিয়ন ইউরো বা বাংলাদেশি মুদ্রায় বিশাল পরিমাণ অর্থ খরচ হবে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এর কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পম্পিদু সেন্টার শুধুমাত্র ফ্রান্সের নয়, বিশ্বজুড়ে শিল্পপ্রেমীদের কাছে একটি পরিচিত নাম।
গত বছর প্রায় ৩২ লক্ষ দর্শক এই জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন, যা ল্যুভর ও অর্সে জাদুঘরের পরেই প্যারিসের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই কেন্দ্রে সালভাদর দালি, হেনরি মাতিস এবং মার্সেল দুচ্যাম্পের মতো বিখ্যাত শিল্পীদের শিল্পকর্ম রয়েছে।
সংস্কারের কারণে, এই মূল্যবান শিল্পকর্মগুলো ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে অস্থায়ীভাবে প্রদর্শনীর জন্য পাঠানো হবে।
বন্ধ হওয়ার আগে, শেষ সময়ে জাদুঘরের আকর্ষণ উপভোগ করতে আসা মানুষের ঢল নেমেছিল।
দর্শনার্থীরা তাদের প্রিয় শিল্পকর্মগুলো দেখার পাশাপাশি কর্মশালা, বিভিন্ন পরিবেশনা ও ডিজে সেট উপভোগ করেন।
অনেকে নিয়মিত দর্শক ছিলেন, আবার কেউ কেউ প্রথমবারের মতো এই জাদুঘর পরিদর্শনে এসেছিলেন।
১১ বছর বয়সী আলিসা নামের এক ফরাসি বালিকা তার দাদার সঙ্গে এসেছিল এবং ডাচ শিল্পী পিট মন্ড্রিয়ানের বিমূর্ত চিত্রকর্মগুলো “আসলে কেমন” তা দেখতে চেয়েছিল।
ব্রাজিলের ২৫ বছর বয়সী পাওলা গুলার্ট এসেছিলেন প্যারিসের স্কাইলাইনের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য।
তার পর্তুগিজ বন্ধু লুইস ফ্রাগা ছিলেন নিয়মিত দর্শক এবং তিনি চেয়েছিলেন “এখানে আসার আগে শিল্পকর্মগুলো যতটা সম্ভব উপভোগ করতে”।
পম্পিদু সেন্টার ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর নামকরণ করা হয়েছে ফ্রান্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জর্জেস পম্পিদুর নামে।
এই জাদুঘরটি শুধু একটি শিল্প সংগ্রহশালাই নয়, বরং এখানে একটি বিশাল লাইব্রেরি ও সঙ্গীত গবেষণা কেন্দ্রও রয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার নিঃসন্দেহে বিশ্বজুড়ে শিল্প অনুরাগী ও গবেষকদের জন্য একটি বড় খবর।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য ও শিল্পকলার সংরক্ষণে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত, যা আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান