মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার অতীতের কিছু বিতর্কিত টুইট নিয়ে বর্তমানে আলোচনা চলছে। ড্যারেন বিটি নামের ওই কর্মকর্তা বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জানা গেছে, তিনি তার বর্তমান বস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে নিয়ে আগে বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন, যা তিনি সম্প্রতি মুছে ফেলেছেন।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ড্যারেন বিটি অন্তত ছয়টি টুইট মুছে দিয়েছেন, যেখানে তিনি রুবিওকে ‘কম বুদ্ধিসম্পন্ন’ এবং তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে মিথ্যা মন্তব্য করেছিলেন। সিএনএন-এর অনুসন্ধানে বিটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও বিটি বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধেও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন, তবে রুবিওকে নিয়ে করা বিতর্কিত মন্তব্যগুলো তিনি তার প্রোফাইল থেকে সরিয়ে ফেলেছেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে রুবিও ভোটের ফলাফল মেনে নেওয়ার পর এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটলে হামলার ঘটনার নিন্দা জানানোর পরেই বিটির সঙ্গে তার বিরোধ স্পষ্ট হয়। জানা যায়, বিটি একসময় ২০১৬ সালের নির্বাচনে রুবিও’র প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েও কটাক্ষ করেছিলেন। এমনকি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশটির নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিলেন কিনা, রুবিও’র এমন মন্তব্যেরও সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
বিটির বিতর্কিত অতীত নতুন নয়। এর আগে, তিনি শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে তার চাকরি চলে যায়। পরবর্তীতে তিনি ‘রিভলভার নিউজ’ নামে একটি ওয়েবসাইটে যুক্ত হন, যা বিভিন্ন সময়ে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করেছে।
বিটির নিয়োগ নিয়ে এরই মধ্যে ডেমোক্র্যাটরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা বলছেন, বিটির অতীতের বর্ণবাদী, নারীবিদ্বেষী এবং সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিষয় অস্বীকার করা বিষয়ক মন্তব্যগুলো এখনো তার সামাজিক মাধ্যমে রয়েছে। রুবিও অবশ্য বিটির অতীতের মন্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছেন, বিটির কাজ হবে মূলত অনলাইন সেন্সরশিপের বিষয়টি দেখাশোনা করা। তবে রুবিও এও জানিয়েছেন যে, বিটিকে স্থায়ীভাবে এই পদে নিয়োগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই, কারণ এর জন্য সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন। উল্লেখ্য, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ ৩০০ দিন পর্যন্ত এই পদে থাকতে পারেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরে বিটির পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পদে থেকে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ও পাবলিক ডিপ্লোমাসির বিষয়গুলো দেখাশোনা করেন। এছাড়াও, তিনি শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক ব্যুরোও পরিচালনা করেন, যা শিক্ষা, পেশাদারিত্ব এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করে থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রুবিও একসময় ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে তিনি এমন সব ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করছেন, যারা প্রকাশ্যে তাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেন। রুবিওর এই অবস্থান তার রাজনৈতিক জীবনে একটি বিশেষ পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন