গ্রিনল্যান্ডে স্বাধীনতার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে ডেনমার্ক থেকে নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দিকে ঝুঁকছে দ্বীপ দেশটি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে গ্রিনল্যান্ডের জনগণের মূল আগ্রহ স্বাধীনতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়ে।
আর্কটিক অঞ্চলের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড, ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। ১৯৭৯ সাল থেকে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে, তবে পররাষ্ট্রনীতি এবং প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ডেনমার্কের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। ডেনমার্ক প্রতি বছর গ্রিনল্যান্ডকে প্রায় ৫৭ কোটি মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে, যা দ্বীপটির মোট বাজেটের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা এবং ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, সেই সিদ্ধান্ত। অনেক গ্রিনল্যান্ডবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন হলো পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করা। তাদের মতে, নিজস্ব ভবিষ্যৎ গড়ার এখনই উপযুক্ত সময়, যেখানে তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করবে।
তবে, গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতা এত সহজে আসবে না। মারিয়া আকরেন নামের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমি মনে করি না খুব দ্রুত পূর্ণ স্বাধীনতা আসবে। গ্রিনল্যান্ডের নির্বাচনে এটি সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। তবে, কিছু রাজনৈতিক দল এর জন্য চেষ্টা চালালেও, দ্রুত স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব নয়। হয়তো ২০ থেকে ৩০ বছর লাগতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ড উভয় দেশের সঙ্গেই সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৌশলগত গুরুত্বের কারণে সেখানে প্রভাব বিস্তারে আগ্রহী ছিল। গ্রিনল্যান্ডে এরই মধ্যে একটি বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
নির্বাচনের প্রাক্কালে, গ্রিনল্যান্ডের একজন প্রভাবশালী সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী কুপানুক ওলসেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি স্বাধীনতা-পন্থী দলের হয়ে লড়ছেন। তিনি মনে করেন, এই নির্বাচন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে স্বাধীনতা নিয়ে ভোট হতে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এর আগে বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সম্পূর্ণ অধিকার গ্রিনল্যান্ডের জনগণের। নির্বাচনের ফলাফল এখন গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা