মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মচারী ছাঁটাই এবং নীতি পরিবর্তনের জেরে দেশটির ফেডারেল সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিবর্তনের ফলে সরকারের স্বচ্ছতা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি জনসাধারণের স্বার্থের পরিবর্তে ব্যক্তিগত লাভের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেডারেল সরকারের কর্মীবাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যা কার্যত ‘পুরস্কারের ব্যবস্থা’র (Spoils system) দিকে ফিরে যাওয়ার শামিল। এক সময় রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে সরকারি পদে নিয়োগ দেওয়া হতো, যেখানে মেধা ও যোগ্যতার কোনো মূল্যায়ন ছিল না। এর ফলস্বরূপ দুর্নীতি ও অযোগ্যতা বেড়ে গিয়েছিল। এমনকি ১৮৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ডকে একজন অসন্তুষ্ট চাকরিপ্রার্থী হত্যা করে। এর পরেই মেধা-ভিত্তিক সরকারি কর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা চালু হয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, ফেডারেল সরকারের এই দীর্ঘদিনের সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে। সরকারি কর্মীদের নির্বিচারে ছাঁটাই করা হচ্ছে, যার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। এমনকি যারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে অপচয়, দুর্নীতি এবং অনিয়ম রোধের কাজ করেন, তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব পদক্ষেপ স্বচ্ছতার সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে না, যা উদ্বেগের কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার পরিচালনায় ‘ইলন মাস্ক’-এর মতো প্রভাবশালী ব্যক্তির যুক্ত হওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, তার ব্যক্তিগত স্বার্থ ও ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, সরকারি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে জনগণের স্বার্থ কতটা সুরক্ষিত হবে, তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের এই ধরনের পরিবর্তন দেশের জনগণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ, এতে সরকারের কার্যকারিতা হ্রাস পাবে এবং জনসাধারণের অর্থ অপচয় হবে। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ক্ষতিপূরণ এবং নতুন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে। এছাড়া, সরকারের নীতি-নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব থাকায় জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হতে পারে।
সরকারের এই পরিবর্তনগুলো কিভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে কংগ্রেসের সক্রিয় হওয়া উচিত। জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
তথ্য সূত্র: সিএনএন