ফ্লোরিডার একটি শহর, যেখানে বহু সংখ্যক ভেনেজুয়েলার মানুষ বসবাস করেন, সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস’ (টিপিএস) বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
এর ফলে সেখানকার বহু ভেনেজুয়েলার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
এই শহরের নাম ডোরল। এটিকে “ডোরলজুয়েলা” নামেও ডাকা হয়, কারণ এখানে অন্য যেকোনো শহরের তুলনায় বেশি ভেনেজুয়েলার অভিবাসী বাস করেন। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের কারণে সেখানকার মানুষের মাঝে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছে। কারণ, এই শহরের অনেক ভেনেজুয়েলার মানুষ ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি কঠোর হবেন, কিন্তু তাদের আত্মীয়দের ফেরত পাঠাবেন না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সেখানকার অর্থনীতিতেও খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ডোরলের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং গ্রাহক মূলত ভেনেজুয়েলার নাগরিক। টিপিএস বাতিল হলে, এই ব্যবসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি শহরের মেয়রও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই সিদ্ধান্তের কারণে শহরের অর্থনীতি স্থবির হয়ে যেতে পারে।
ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মধ্যে যারা টিপিএস-এর সুবিধা ভোগ করছেন, তাদের অনেকেই এখন তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের আশঙ্কা, যদি তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়, তাহলে সেখানে তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। অনেকে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন, কিন্তু এর প্রক্রিয়া খুবই দীর্ঘ।
ডোরলের বাসিন্দাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ এখনো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পরিবর্তনের আশা করছেন, আবার কেউ মনে করছেন তিনি তার অবস্থানে অটল থাকবেন।
ভেনেজুয়েলার নাগরিক ক্যারোল দুরান পেরেজ নামের একজন নারী জানান, তিনি ও তার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন কয়েক সপ্তাহের জন্য ঘুরতে। কিন্তু দেশে ফেরার পরেই তার পরিবারের ওপর হামলার হুমকি বেড়ে যায়। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং টিপিএস-এর মাধ্যমে এখানে থাকার সুযোগ পান।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারে এমন নীতির কারণে, যারা বিভিন্ন সময়ে ভেনেজুয়েলার সরকারের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়ছে। অনেকে মনে করেন, ভেনেজুয়েলার বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জন্য এখনো বসবাসের উপযুক্ত নয়।
বিষয়টি এখন আদালতের বিবেচনাধীন। ডোরলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদের যেন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন