1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
April 18, 2025 6:14 PM
সর্বশেষ সংবাদ:

ট্রাম্পের শুল্ক: ডলার সাম্রাজ্যে ভাঙন?!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Thursday, March 13, 2025,

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি: মার্কিন ডলারের আধিপত্যের ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া কিছু বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে মার্কিন ডলারের প্রভাব কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের নেওয়া শুল্কনীতি, যা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের অবস্থানকে দুর্বল করে দিতে পারে। এর ফলে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছু প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা। এর জন্য তিনি চীন এবং ইউরোপের মতো দেশগুলোর ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিদেশি পণ্যের দাম বাড়বে এবং মার্কিন কোম্পানিগুলো আরও বেশি সুবিধা পাবে। ফলে, দেশীয় উৎপাদন বাড়বে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তবে, অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খরচ অন্যান্য উন্নত দেশ এমনকি এশিয়ার দেশগুলোর চেয়েও অনেক বেশি। শুল্ক আরোপের ফলে পণ্যের দাম বাড়লে, তা মূল্যস্ফীতি (inflation) আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। একইসঙ্গে, এর কারণে ডলারের দামও বাড়তে শুরু করতে পারে। যদিও আপাতদৃষ্টিতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ভালো মনে হতে পারে, তবে শুল্কের কারণে বাণিজ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এই সুবিধা কমে যেতে পারে।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের চাহিদা অনেক বেশি। এর প্রধান কারণ হলো, বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা ডলারকে একটি স্থিতিশীল মুদ্রা হিসেবে বিবেচনা করে। এই কারণে, যুক্তরাষ্ট্র সহজেই বাণিজ্য ঘাটতি (trade deficit) এবং বাজেট ঘাটতি (fiscal deficit) বজায় রাখতে পারে, যা তাদের অর্থনীতির ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলে না।

ডলারের এই আধিপত্য ধরে রাখতে ট্রাম্প বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি চান, অন্য দেশগুলো যেন ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্যবহারের চেষ্টা না করে। এমনকি, যেসব দেশ ডলারের বিকল্প খুঁজছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন। যেমন, রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্বে গঠিত ‘ব্রিক্স’ (BRICS) জোটের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা দেশগুলোর প্রতি তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

ট্রাম্পের এই নীতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থার নিয়ম পরিবর্তনের একটি অংশ। তিনি চান, অন্যান্য দেশের তুলনায় ডলারের বিনিময় হার দুর্বল থাকুক, কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের গুরুত্ব যেন কমে না যায়।

তবে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি তাঁর মিত্র দেশ কলম্বিয়াকে সামরিক বিমান গ্রহণ করতে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন এবং তা না মানলে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন। এই ধরনের আচরণ বাণিজ্য শুল্কের চেয়েও বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে, কারণ এর ফলে ডলার, মার্কিন সরকারি বন্ড এবং সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

ট্রাম্পের এই নীতি যদি সফল হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতে কিছু সুবিধা আসতে পারে। তবে, এর ঝুঁকিও রয়েছে। যদি ডলারের আধিপত্য দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে এবং মন্দা (recession) দেখা দিতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য কিছু বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের দুর্বলতা দেখা দিলে, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের ব্যবহার অনেক বেশি। এছাড়াও, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। তাই, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT