কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের জেরে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ডিগ্রি বাতিল ও ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের ‘আচরণ’ এবং অতীতের ঘটনার ভিত্তিতে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করারও আহ্বান জানায়। এর পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
এর আগে, গত ৭ মার্চ, মার্কিন সরকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিল বাতিল করে। সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু কলম্বিয়াই নয়, একই অভিযোগে আরও ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন শিক্ষা বিভাগ গত ১০ মার্চ এই বিষয়ে একটি চিঠি পাঠায়, যেখানে ‘জাতিগত বিদ্বেষমূলক হয়রানি ও বৈষম্যের’ অভিযোগ আনা হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের ক্যাম্পাসগুলোতে ‘ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা’ নিশ্চিত করতে হবে, যার মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়া এবং ক্যাম্পাস ব্যবহারের সুযোগ দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত।
মার্কিন শিক্ষা সচিবের বরাত দিয়ে জানা যায়, দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইহুদি শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
এদিকে, বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে সম্প্রতি আটক করেছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। মাহমুদকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগেরও আশংকা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিন বা ইউক্রেন সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করা হয়েছে। বিভাগের ডিন শিক্ষার্থীদের বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক। নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে এই ধরনের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।’
এছাড়াও, বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা