কর্ণওয়ালে জেলেদের জীবন: প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক নিয়ে এক আলোকচিত্রীর কাজ।
ইংল্যান্ডের একটি উপকূলীয় অঞ্চল, কর্ণওয়াল। এখানকার জেলেদের জীবনযাত্রা, প্রকৃতি আর মানুষের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেছেন আলোকচিত্রী জন টঙ্কস।
তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এখানকার জেলেদের জীবনসংগ্রাম, যা ‘এ ফিশ কলড জুলি’ (A Fish Called Julie) নামে পরিচিত। এই কাজটি টেকসই (sustainable) উপায়ে মাছ ধরার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে।
টঙ্কস, যিনি বার্মিংহামে জন্মগ্রহন করেছেন, পেশাগত কাজের অংশ হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে ১৮ মাস ধরে কর্ণওয়ালের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরেছেন। নিউলিন, আইলস অফ স্কিলি, মাউসহোল এবং ক্যাডগুইথের মতো জায়গাগুলোতে ছোট ছোট নৌকার জেলেদের জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখেছেন তিনি।
তাঁদের কাজ করার ধরন, প্রকৃতির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক, এইসব কিছুই তাঁর ক্যামেরার বিষয়বস্তু ছিল।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, টঙ্কস মূলত ছোট নৌকার জেলেদের ওপর দৃষ্টি দিয়েছেন। সাধারণত, বড় ট্রলারগুলো বেশি মাছ ধরে, কিন্তু এতে পরিবেশের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ার সম্ভবনা থাকে।
অন্যদিকে, ছোট নৌকার জেলেরা প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাছ ধরেন। তাঁরা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে এবং মাছের প্রজননকালে মাছ ধরা বন্ধ রাখেন। এই ধরনের টেকসই পদ্ধতি মাছের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
টঙ্কস তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “কর্ণওয়ালে মাছ ধরা যেন জীবনেরই প্রতিচ্ছবি।” জেলেদের জীবন সূর্যের আলো, বাতাসের গতি এবং ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে বাঁধা।
তাঁর তোলা ছবিগুলোতে সমুদ্র এবং উপকূলের জীবন, জেলেদের কঠোর পরিশ্রম, এমনকি স্থানীয় উৎসব – সবই স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
উদাহরণস্বরূপ, টঙ্কস মাউসহোলের ‘টম বাওককের’ উৎসবের ছবি তুলেছেন, যেখানে এক সাহসী জেলের সমুদ্রযাত্রার গল্প উদযাপন করা হয়।
এই আলোকচিত্রীর কাজটি ‘দ্য গায়া ফাউন্ডেশন’-এর ‘উই ফিড দ্য ইউকে’ নামক প্রকল্পের অংশ। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, টেকসই খাদ্য উৎপাদন এবং পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা।
জন টঙ্কসের তোলা ছবিগুলো আগামী ৩ এপ্রিল থেকে ২২ জুন পর্যন্ত ব্রিস্টলের মার্টিন প্যার ফাউন্ডেশনে প্রদর্শিত হবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, টঙ্কস দেখিয়েছেন কীভাবে প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
একইসঙ্গে, তিনি বর্তমান প্রজন্মের জেলেদের মধ্যে টেকসই উপায়ে মাছ ধরার যে আগ্রহ, সেটির ওপর জোর দিয়েছেন।
তাঁর মতে, তরুণ প্রজন্মের জেলেদের এই সচেতনতা, ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান