ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে এবং মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)। প্যারিস-ভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতির হালনাগাদ চিত্র তুলে ধরে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে।
তাদের পূর্বাভাসে, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ওইসিডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্য বাধা এবং ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে, যা ইতোমধ্যেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসার পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
সংস্থাটি চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তাদের মতে, বাণিজ্য বাধা বাড়লে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও কমবে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
অন্যদিকে, বাণিজ্য বাধা কমালে অনিশ্চয়তা কমবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি এপ্রিল মাস থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন, তাহলে এই তিনটি দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
এর ফলে, মেক্সিকোতে ২০২৩ সালে ১.৩ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ০.৬ শতাংশ অর্থনৈতিক সংকোচন হতে পারে। কানাডার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও কমানো হয়েছে। এই বছর তারা ২.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারতো, কিন্তু এখন তা কমিয়ে ২.২ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৬ সালে তাদের প্রবৃদ্ধি ২.১ শতাংশ থেকে কমে ১.৬ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। চীনের প্রবৃদ্ধি এই বছর ৪.৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৬ সালে ৪.৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলেও ওইসিডি জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষতির শিকার হবে। যদিও যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ব পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এবং এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ব্রিটেন প্রস্তুত।
যুক্তরাজ্যের জন্য মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা এই বছর ২.৭ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ২.৩ শতাংশ থাকতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই মন্দা পরিস্থিতি দেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং রেমিট্যান্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে আমাদের বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান