ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর)- শারীরিক কষ্টের উপশমে নতুন দিগন্ত
সাম্প্রতিককালে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) প্রযুক্তি চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। উন্নত বিশ্বে এই প্রযুক্তি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক হিসেবে ক্রমশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভিআর প্রযুক্তির মাধ্যমে শারীরিক কষ্টের উপশমের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে।
শারীরিক অক্ষমতাকে জয় করে কাজের নতুন দিগন্ত
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেখক দীর্ঘদিন ধরে ঘাড় ও কাঁধের ব্যথায় ভুগছিলেন। এই কারণে তার দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং লেখালিখিতে অসুবিধা হতো।
প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে তেমন কোনো সুফল না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি ভিআর প্রযুক্তির সাহায্য নেন।
ভিআর গগলস ব্যবহারের মাধ্যমে লেখক তার শারীরিক সীমাবদ্ধতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন। ভিআর-এর বিশেষত্ব হলো এর আই-ট্র্যাকিং এবং ভয়েস কন্ট্রোল প্রযুক্তি, যা ব্যবহারকারীকে হাত ছাড়াই কাজ করতে সাহায্য করে।
ভিআর প্রযুক্তির সুবিধা
ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে, লেখক ব্যথামুক্তভাবে কাজ করতে শুরু করেন এবং এটি তার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সহায়ক হয়।
ভিআর-এর মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক পরিবেশে ছবি দেখা, গেম খেলা এবং অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ তৈরি হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, এই প্রযুক্তি পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে পারে।
তাছাড়া, এটি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভিআর-এর সম্ভাবনা
বাংলাদেশেও ভিআর প্রযুক্তির সম্ভাবনা অনেক। বিশেষ করে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এই প্রযুক্তি শিক্ষা, চিকিৎসা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, প্যারালাইসিস বা সেরিব্রাল পালসির মতো সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ভিআর-ভিত্তিক থেরাপি শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। তাছাড়া, ভিআর-এর মাধ্যমে জটিল অস্ত্রোপচারের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে, যা চিকিৎসা সেবার মান উন্নত করতে সহায়ক হবে।
যদিও ভিআর প্রযুক্তি এখনো বেশ ব্যয়বহুল, তবে প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এর দাম কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভিআর প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আরও উন্নত হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বিনোদন— সব ক্ষেত্রেই ভিআর নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান