মার্চ মাসের উন্মাদনা: বাস্কেটবলের চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি
যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট ‘মার্চ ম্যাডনেস’–এর জন্য এখন অপেক্ষার পালা। প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টটি দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় একটি ক্রীড়া আসর।
কোটি কোটি দর্শক টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখে এই টুর্নামেন্টের প্রতিটি মুহূর্তের জন্য। দল নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর শুরু হবে মাঠের লড়াই।
কোন দল চ্যাম্পিয়ন হবে, সে হিসাব মেলানোর প্রস্তুতি চলছে এরই মধ্যে। টুর্নামেন্টের দল নির্বাচনের দিনটি ‘সিলেকশন সানডে’ নামে পরিচিত।
এবারও এই দিনটি ছিল অনেক দলের জন্য উদ্বেগের। বিশেষ করে নর্থ ক্যারোলাইনা এবং টেক্সাসের মতো দলগুলোর জন্য এটি ছিল একটি কঠিন সময়।
কারণ, তাদের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। অন্যদিকে, শীর্ষ বাছাই হিসেবে বিবেচিত ডিউক ও অবার্নের মতো দলগুলো কখন এবং কোথায় খেলবে, সেই বিষয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল।
আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার প্লে-ইন গেমের মাধ্যমে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। এরপর, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার প্রথম রাউন্ডের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
আটটি ভেন্যুতে মোট ৩২টি দল এই পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আগামী ৫ ও ৭ এপ্রিল সান আন্তোনিওতে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।
বাজি বাজারের হিসাব অনুযায়ী, এবারের টুর্নামেন্টে অবার্ন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে আছে। তাদের পরেই রয়েছে ডিউক, ফ্লোরিডা এবং হিউস্টনের মতো দলগুলো।
এছাড়া, ইউকনও টুর্নামেন্টে অংশ নেবে এবং টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেষ্টা করবে। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে এমনটা দেখা গিয়েছিল।
অভিজ্ঞ কোচ রিক পিটিনোর অধীনে বিগ ইস্ট চ্যাম্পিয়ন সেন্ট জনসও এবার অন্যতম শীর্ষ দল হিসেবে মাঠে নামবে।
নর্থ ক্যারোলাইনা (ট্যার হিলস) এবং টেক্সাস (লংহর্নস) দল দুটির দিকে সবার নজর থাকবে।
কারণ, তাদের টুর্নামেন্টে খেলার সম্ভাবনা এখনো অনিশ্চিত। কলোরাডো স্টেট তাদের কনফারেন্স টুর্নামেন্টে ভালো খেলায় তাদের সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
কনফারেন্স টুর্নামেন্টে নর্থ ক্যারোলাইনা এবং টেক্সাস দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। একসময় তাদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল দেখা গেলেও এখন তাদের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
দল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিটি এই দলগুলোর পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেবে। এর ওপর নির্ভর করবে তাদের কনফারেন্সগুলোর ভবিষ্যৎ।
যদি টেক্সাস দল সুযোগ পায়, তাহলে সাউথইস্টার্ন কনফারেন্স (এসইসি) থেকে ১৪টি দল টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাবে, যা মার্চ ম্যাডনেসের ইতিহাসে একটি রেকর্ড হতে পারে।
এর আগে ২০১১ সালে, বিগ ইস্ট কনফারেন্স থেকে ১১টি দল খেলার সুযোগ পেয়েছিল। অন্যদিকে, নর্থ ক্যারোলাইনা দল যদি বাদ পরে যায়, তাহলে আটলান্টিক কোস্ট কনফারেন্স (এসিসি) থেকে মাত্র তিনটি দল টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাবে।
২০00 সালে, যখন এই লিগে নয়টি দল ছিল, তখনও এত কম দল সুযোগ পেয়েছিল।
টেক্সাস ও নর্থ ক্যারোলাইনা দল আমেরিকান অ্যাথলেটিক কনফারেন্সের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ এবং আটলান্টিক ১০-এর খেলায়ও নজর রাখবে।
যদি মেমফিস বা ভিসিইউ-এর মতো দল হেরে যায়, তাহলে আরো একটি দল টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেতে পারে।
এবারের টুর্নামেন্টে শীর্ষ বাছাই হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে ডিউক। তবে, তাদের সেরা খেলোয়াড় কুপার ফ্ল্যাগ ইনজুরি কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন কিনা, সে বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
অন্যদিকে, এসইসি টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে হারলেও অবার্নের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, বিগ ১২ চ্যাম্পিয়ন হিউস্টনও শীর্ষ বাছাই হওয়ার চেষ্টা করবে।
ফ্লোরিডারও ভালো সম্ভাবনা ছিল, তবে এসইসি-র ফাইনালে টেনেসি-র কাছে হার তাদের সম্ভাবনা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস