মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসন সংক্রান্ত একটি বিতর্কে নতুন মোড় এসেছে। দেশটির একটি আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ জারি করেছিলেন, যাতে ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর অধীনে কোনো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা না হয়।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করে দুই শতাধিক মানুষকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন ট্রাম্প প্রশাসন ১৮ শতকের পুরনো একটি আইন, ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ পুনরায় চালু করে। এই আইনের অধীনে, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ‘টেইন দে আরাগয়া’ নামে একটি গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যে কোনও বিদেশি নাগরিককে, কোনো প্রমাণ ছাড়াই, বিতাড়িত করার ক্ষমতা রাখতেন।
এরপর, মামলার বাদী পক্ষ, যাদের মধ্যে কয়েকজন ভেনেজুয়েলীয় নাগরিক ছিলেন, তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে তাদের গ্যাং সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে অভিযুক্ত করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে।
বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে বিচারক শনিবার রাতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, যেন কাউকে বিতাড়িত না করা হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, আদালতের নির্দেশ জারির পরেও কিছু অভিবাসীকে এল সালভাদরে পাঠানো হয়।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাজিব বুকেলে এক টুইট বার্তায় জানান, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিতাড়িত হওয়া দুই শতাধিক অভিবাসী ইতোমধ্যে তাদের দেশে পৌঁছেছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও বুকেলের এই টুইট-এর প্রশংসা করা হয়।
তবে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেনি। তাদের মতে, আদালতের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের বিমানগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না।
তারা আরও যুক্তি দেখিয়েছেন যে, আদালতের এই আদেশ ‘বৈধ’ ছিল না এবং এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, মামলার বাদী পক্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছে, যাতে ট্রাম্প প্রশাসনকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বাধ্য করা হয় যে তারা আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে কিনা।
বিচারক সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন এবং সরকারের আইনজীবীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
এই মামলার রায় ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস