যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই শান্তি আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো– ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বন্ধ করা এবং দীর্ঘমেয়াদী একটি রাজনৈতিক সমাধানের দিকে যাওয়া।
আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো– ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের (দনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া) ভবিষ্যৎ। রাশিয়া এই চারটি অঞ্চলের উপর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, যদিও অঞ্চলগুলো এখনো তারা পুরোপুরিভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি।
অন্যদিকে, ইউক্রেন চাইছে– এই অঞ্চলগুলো থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করতে এবং তাদের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করতে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইউক্রেনের সামরিক নিরপেক্ষতা। রাশিয়া চায়– ইউক্রেন যেন কোনো সামরিক জোটের সদস্য না হয়, বিশেষ করে ন্যাটো’র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এর বিনিময়ে রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি হতে পারে। এছাড়াও, রুশ ভাষাভাষীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি– উভয়েই শান্তি আলোচনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
রাশিয়াও এই ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে, শান্তি আলোচনা কতদূর গড়াবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ, উভয় পক্ষের মধ্যে এখনো অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই শান্তি আলোচনা সফল হলে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হতে পারে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে।
তবে, এর ফলস্বরূপ রাশিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে কিনা, সেই বিষয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ রয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত হবে রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে পৌঁছানো।
যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা দেখা দিলেও, এটি এখনো একটি অনিশ্চিত প্রক্রিয়া।
আলোচনার টেবিলে আসা বিষয়গুলোর সমাধান এবং উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা কত সহজে হয়, তার উপর নির্ভর করছে– ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা