যুক্তরাষ্ট্রে বন্দর দূষণ কমাতে প্রচেষ্টা: অর্থের যোগান নিয়ে অনিশ্চয়তা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সমুদ্রবন্দরগুলোতে দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো এখন অনিশ্চয়তার মুখে। দেশটির বিভিন্ন বন্দরে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং পরিবেশ দূষণ কমাতে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন।
কিন্তু নতুন করে ক্ষমতায় আসা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সেই অর্থ কমিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছে। এর ফলে দূষণ কমানোর চলমান কাজগুলো বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস এবং লং বিচ-এর মতো ব্যস্ততম বন্দরগুলোতে দূষণ একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। এই বন্দরগুলোর আশেপাশে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এখানকার কলকারখানা ও জাহাজ থেকে নির্গত ধোঁয়া স্থানীয় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে। জানা যায়, বাইডেন প্রশাসন দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল তৈরি করেছিল।
এই অর্থ দিয়ে পুরোনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তন এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল।
কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হতে শুরু করেছে। তিনি তার আগের সরকারের জলবায়ু নীতিগুলোর বিরোধিতা করছেন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে বরাদ্দ করা অর্থ অন্য খাতে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এর ফলে পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্দরগুলোতে ডিজেল-চালিত যন্ত্রপাতির পরিবর্তে বিদ্যুচ্চালিত সরঞ্জাম ব্যবহার করা গেলে দূষণ অনেক কমে আসবে। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থ এবং উপযুক্ত অবকাঠামো।
বিদ্যুচ্চালিত সরঞ্জাম স্থাপন করা বেশ ব্যয়বহুল। একটি বন্দরের বিদ্যুৎ সংযোগ উন্নত করতেও প্রচুর অর্থ খরচ হয়।
লস অ্যাঞ্জেলেস এবং লং বিচ বন্দরের কাছাকাছি বসবাসকারী থেরাল গোল্ডেন নামের একজন জানান, “আমাদের এলাকা বন্দরের কার্যক্রমের কারণে সরাসরি দূষণের শিকার হচ্ছে। এখানে প্রতিনিয়ত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।”
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বন্দরে দূষণ কমানোর চেষ্টা চলছে। তবে, এটি সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল একটি প্রক্রিয়া।
বিভিন্ন বন্দর কর্তৃপক্ষ কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
দূষণের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ এবং অন্যান্য জটিলতা অন্যতম।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, অন্যথায় এর ক্ষতিকর প্রভাব আরও বাড়বে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস