ইমান খেলিফ: লস অ্যাঞ্জেলেসে অলিম্পিক স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন।
সম্প্রতি প্যারিস অলিম্পিকে আলোড়ন সৃষ্টিকারী আলজেরীয় বক্সার ইমান খেলিফ ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে আবারও স্বর্ণপদক জয়ের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। একইসঙ্গে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন।
গত বছর প্যারিস অলিম্পিকে বিতর্ক ও ব্যাপক মিডিয়া কভারেজের মধ্যে স্বর্ণপদক জয় করেন ২৫ বছর বয়সী এই বক্সার। এরপর ট্রাম্প তাঁর সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে ট্রান্সজেন্ডার (Transgender) বলে মন্তব্য করেন।
ইমান খেলিফ বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমি ট্রান্সজেন্ডার নই।
এটা আমাকে উদ্বিগ্ন করে না এবং আমি এতে ভীত নই। এটাই আমার জবাব।”
প্যারিসে তাঁর সাফল্যের পুনরাবৃত্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অবশ্যই দ্বিতীয় স্বর্ণপদক জিততে চাই। আমেরিকায়, লস অ্যাঞ্জেলেসে।”
প্যারিস অলিম্পিকে ইমানের জয় এবং তাইওয়ানের লিন ইউ-টিংয়ের (Lin Yu Ting) সাফল্যের পর লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইলন মাস্ক এবং জে কে রাওলিংয়ের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এতে মন্তব্য করেন।
গত আগস্টে মাস্ক ও রাওলিংয়ের বিরুদ্ধে ‘সাইবার হয়রানি’র অভিযোগ এনে মামলা করেন ইমান। তিনি জানান, এই ঘটনার জেরে তিনি মানসিকভাবে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তাঁর পরিবারের উপরও এর প্রভাব পড়েছে, এমনকি তাঁর মাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) অবশ্য এই বিতর্কিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ)-এর নেওয়া সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দেয়।
আইবিএ-কে তখন অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল।
ইমান বলেন, “আলজেরিয়ায় আমরা বলি, যার লুকানোর কিছু নেই, তার ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। প্যারিস অলিম্পিকে সত্য প্রকাশিত হয়েছে।
অন্যায় উন্মোচিত হয়েছে এবং পরে আইওসি’র মাধ্যমে সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়, আমি অন্য মেয়েদের মতোই একজন। আমি একজন মেয়ে হিসেবে জন্ম নিয়েছি, বেড়ে উঠেছি এবং জীবন কাটিয়েছি।
আমি অনেক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি, যেমন টোকিও অলিম্পিক এবং অন্যান্য বড় প্রতিযোগিতা, এমনকি চারটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও খেলেছি। যখন আমি জয় পেতে শুরু করি, তখনই আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়।”
বিদায়ী আইওসি প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ (Thomas Bach) সম্প্রতি জানান, দুই বক্সারকে নিয়ে হওয়া বিতর্কটি ছিল ‘রাশিয়া থেকে আসা একটি ভুয়া খবর প্রচারণার’ ফল।
বাখ আরও বলেন, “তাদের মেয়ে হিসেবেই বড় করা হয়েছে, তারা মেয়ে হিসেবেই প্রতিযোগিতা করেছে এবং অন্যদের মতোই জয়-পরাজয় বরণ করেছে।”
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান