হলিউডের একজন স্বনামধন্য পরিচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি নেটফ্লিক্সের সাথে ১১ মিলিয়ন ডলারের প্রতারণা করেছেন, যে অর্থের বিনিময়ে একটি কল্পবিজ্ঞান নির্ভর অনুষ্ঠান নির্মাণের কথা ছিল, যা কোনোদিনই আলোর মুখ দেখেনি।
পরিচালক কার্ল এরিক রিন্সকে (Carl Erik Rinsch), যিনি ’47 Ronin’ সিনেমা পরিচালনা করে পরিচিতি লাভ করেন, তার বিরুদ্ধে তারের মাধ্যমে প্রতারণা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, নেটফ্লিক্স প্রাথমিকভাবে ‘হোয়াইট হর্স’ (White Horse) নামের একটি অসমাপ্ত অনুষ্ঠানের জন্য রিন্সকে প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে। এরপর, অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত আরও ১১ মিলিয়ন ডলার চেয়ে নেন রিন্স।
কিন্তু সেই টাকা তিনি প্রকল্পের কাজে ব্যয় না করে ক্রিপ্টোকারেন্সি (cryptocurrency) খাতে বিনিয়োগ করেন এবং বিলাসবহুল সামগ্রী কেনাকাটায় খরচ করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিন্স অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার পর তা ব্যক্তিগত একটি ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন। সেখান থেকে তিনি বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করেন, যার ফলস্বরূপ দুই মাসের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি অর্থ হারান।
এরপর তিনি বাকি টাকা ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে বিনিয়োগ করেন, যা তার জন্য লাভজনক হয়েছিল। সেই লাভের অর্থ তিনি নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করেন।
এরপর, পরিচালক প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার ব্যক্তিগত খরচ এবং বিলাসিতার পেছনে ব্যয় করেন। এর মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে ১.৮ মিলিয়ন ডলার, আইনজীবীদের ফি বাবদ ১ মিলিয়ন ডলার, আসবাবপত্র এবং প্রাচীন জিনিসপত্রের জন্য ৩.৮ মিলিয়ন ডলার, পাঁচটি রোলস-রয়েস ও একটি ফেরারি কিনতে প্রায় ২.৪ মিলিয়ন ডলার এবং ঘড়ি ও পোশাকের জন্য ৬ লক্ষ ৫২ হাজার ডলার খরচ করেছেন।
রিন্সকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েস্ট হলিউড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (local time) তার প্রাথমিক শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়।
শুনানিতে তাকে শৃঙ্খলিত অবস্থায় দেখা যায়। তিনি বিচারকের প্রশ্নের জবাবে জানান, তিনি অভিযোগনামাটি পুরোপুরি পড়েননি, তবে অভিযোগগুলো বুঝতে পারছেন।
বিচারক পেদ্রো ভি. কাস্টিলো ১ লক্ষ ডলারের বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন। নিউইয়র্কের আদালতে তার মামলার পরবর্তী তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে রিন্সের আইনজীবী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। নেটফ্লিক্সও এই ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।