মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক ও কর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে, যা আগামী নির্বাচনে দলটির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দলের দুর্বল প্রতিরোধ এবং নেতাদের মধ্যে ঐক্যমতের অভাব এই হতাশার মূল কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে সিনেটের ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী নির্বাচনে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পাওয়ার জন্য ডেমোক্রেটদের লড়াই করতে হচ্ছে। কিন্তু দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সিনেটরের আসন্ন অবসর গ্রহণের ঘোষণা সেই সম্ভাবনাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক ডেমোক্রেট সমর্থক মনে করছেন, সিনেটের চেয়ে বরং প্রতিনিধি পরিষদে মনোযোগ দেওয়া উচিত, যেখানে রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধে জেতার সুযোগ বেশি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডেমোক্রেটদের দুর্বলতার পেছনে প্রধান কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারা। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি, সরকারি ব্যয় হ্রাস এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়োগ নিয়ে ডেমোক্রেটদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।
উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি ইলন মাস্ককে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে বসানো নিয়েও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ডেমোক্রেট পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দলও তাদের দুর্বলতার একটি কারণ। সিনেটে সংখ্যালঘু দলের নেতা চাক শুমারের একটি বিলের পক্ষে ভোট দেওয়া নিয়ে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করেন, শুমার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন।
অর্থনৈতিক সমর্থনের ক্ষেত্রেও ডেমোক্রেটদের সমস্যা হচ্ছে। অনেক বড় অঙ্কের অর্থ সরবরাহকারী এখন দলটির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন এবং স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে অর্থ যোগান দিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, দলের নেতারা ট্রাম্প প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছেন না।
এর ফলে দলের প্রতি অনুগত অনেক সমর্থক হতাশ হয়ে অন্য পথে হাঁটতে শুরু করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেমোক্রেটদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে। একদিকে ট্রাম্প এবং তার সমর্থকরা নির্বাচনের জন্য বিশাল তহবিল সংগ্রহ করছেন, অন্যদিকে ডেমোক্রেটদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের অভাব দেখা যাচ্ছে।
তবে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রচার কমিটির কর্মকর্তারা বলছেন, তারা আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তারা বিশ্বাস করেন, রিপাবলিকানদের দুর্বলতাগুলো কাজে লাগিয়ে তারা নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেমোক্রেটদের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভোটারদের কাছে তাদের বার্তা সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া। তাদের দেখাতে হবে যে তারা ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সাধারণ মানুষের পাশে আছে। যদিও পরিস্থিতি কঠিন, অনেক ডেমোক্রেট এখনও মনে করেন, সঠিক কৌশল নিলে নির্বাচনে ভালো করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন