ক্রিকেট খেলার জগতে, খেলোয়াড়দের শারীরিক এবং মানসিক দৃঢ়তার প্রমাণ প্রায়ই দেখা যায়। তবে, এমন কিছু খেলোয়াড় আছেন যারা শারীরিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন।
এই প্রতিবেদনে আমরা তেমনই দুজন ক্রিকেটারের গল্প তুলে ধরব, যাদের ঘ্রাণশক্তি ছিল না, কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের উজ্জ্বল করেছেন।
প্রথমজন হলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক আথারটন। জন্ম থেকে তিনি ঘ্রাণহীনতার সমস্যায় ভুগছিলেন।
শৈশবে তার মা বিষয়টি লক্ষ্য করেন, যখন তিনি গ্রামের দুর্গন্ধের (যেখানে তিনি থাকতেন) বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতেন না।
আথারটন পরবর্তীতে এই বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেননি, তবে কোভিড-১৯ মহামারীর সময় যখন সবাই ঘ্রাণ হারানোর কথা বলছিলেন, তখন তিনি প্রথমবারের মতো অনুভব করেন যে তিনি আসলে কত বড় একটি জিনিস থেকে বঞ্চিত।
আথারটনের ঘ্রাণ না থাকার কারণে কিছু সমস্যাও হয়েছে। যেমন, খাবারের স্বাদ বুঝতে তার সমস্যা হয় এবং মাঝে মাঝে তিনি চা ও কফির মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না।
এছাড়া, তিনি সম্ভবত কিছু ক্ষেত্রে পোশাকের গন্ধের কারণে অস্বস্তিতে পড়েছেন। তবে, আথারটন এই বিষয়টিকে খুব স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেছেন।
তার মতে, ঘ্রাণ না থাকলে যদি একটি ইন্দ্রিয় হারাতেই হয়, তবে সেটি ঘ্রাণ হওয়াই ভালো।
আরেকজন খেলোয়াড় হলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার সাইমন ক্যাটিচ। গ্রন্থি-জ্বর (glandular fever) হওয়ার পর তিনি ঘ্রাণশক্তি হারান।
এর ফলে তার খেলার জীবনে কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। তবে, এটি তাকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি।
এমনকি, তিনি অস্ট্রেলিয়ার একটি জনপ্রিয় রান্নার অনুষ্ঠানে (Celebrity MasterChef) অংশ নিয়েছিলেন এবং সেখানে তার রান্নার দক্ষতা দিয়ে বিচারকদের মুগ্ধ করেছিলেন।
প্রশ্ন উঠতে পারে, ঘ্রাণ না থাকা কি তাদের মানসিক শান্তির কারণ ছিল?
হয়তো মাঠের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এটি তাদের শান্ত থাকতে সাহায্য করেছে। অথবা, সাধারণ জীবনযাত্রায় তারা অন্য অনেক ক্রিকেটারের চেয়ে আলাদা ছিলেন, যা তাদের খেলায় প্রভাব ফেলেছে।
যাই হোক না কেন, আথারটন এবং ক্যাটিচের জীবন থেকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাই। শারীরিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।
তাদের এই গল্প ক্রীড়ামোদীসহ সকলের জন্য অনুপ্রেরণা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান