ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সন্দেহ
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে হওয়া একটি আংশিক যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে গভীর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় নেতারা। তাদের মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক নন।
চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। তবে, গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রস্তাবিত এবং ইউক্রেন কর্তৃক সমর্থিত, ৩০ দিনের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনাটি রাশিয়া গ্রহণ করতে রাজি হয়নি।
জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “মনে হচ্ছে পুতিন এখানে একটা খেলা খেলছেন।” তিনি আরও বলেন, “এই তথাকথিত গুরুত্বপূর্ণ এবং চমৎকার ফোনালাপের প্রথম রাতেই বেসামরিক অবকাঠামোর উপর হামলা কমে নি।” পিস্টোরিয়াস আরও উল্লেখ করেন যে, ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো এমনিতেই “সবচেয়ে সুরক্ষিত”।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখবেন। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবও রাশিয়ার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন যে কিয়েভকে সাহায্য করা বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান, কজা কালাস, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার এই চুক্তিকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “এটা স্পষ্ট যে রাশিয়া কোনো ছাড় দিতে চাইছে না।”
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলভারেসও শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন। তিনি এই যুদ্ধকে “একজনের যুদ্ধ” হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, “পুতিনের এই যুদ্ধ বন্ধ করার কোনো বাস্তব ইচ্ছা নেই।”
তবে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য সকল প্রচেষ্টা সমর্থন করি এবং এটিকে শান্তির দিকে একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করি।”
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ শুরু করে। এছাড়া ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার খবরও পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় নেতাদের এই প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট যে, তারা রাশিয়ার যুদ্ধবিরতির ঘোষণাটিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন এবং তাদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান