যুক্তরাজ্যের ‘আইল অফ ওয়াইট’ -এ: এক গাড়ি-মুক্ত ভ্রমণ। বর্ষাকালে ছুটি কাটানোর জন্য চমৎকার একটি গন্তব্য হতে পারে যুক্তরাজ্যের ‘আইল অফ ওয়াইট’ দ্বীপ।
যেখানে আপনি প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন, এবং বিখ্যাত কবি লর্ড টেনিসন, লেখিকা ভার্জিনিয়া উলফ ও কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী জিমি হেন্ডরিক্সের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।
সবচেয়ে বড় কথা, এখানে ভ্রমণের জন্য গাড়ির কোনো প্রয়োজন নেই। ট্রেন এবং ফেরির মাধ্যমে সহজেই এখানে যাওয়া যায়, আর দ্বীপের ভেতরে ভ্রমণের জন্য রয়েছে চমৎকার বাস পরিষেবা।
লন্ডন থেকে ট্রেনে করে যাওয়া যেতে পারে ‘লাইমিংটন পিয়ার’-এ, যেখান থেকে ফেরিতে করে যাওয়া যায় ‘আইল অফ ওয়াইট’-এর ইয়ামাউথে। ফেরি থেকে দেখা যায় দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র আর সাদা পালতোলা নৌকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
এই দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ।
আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমী হন, তাহলে ‘টেনিসন ট্রেইল’-এ হেঁটে যাওয়া আপনার জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা হবে। এই পথটি দ্বীপের পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে গেছে।
এখানকার সবুজ ঘাস আর সাদা পাথরের পাহাড়ের দৃশ্য যে কারো মন জয় করে নিবে। এছাড়া, এখানে নানা ধরনের বুনো ফুল ও প্রজাপতির দেখা পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘ডিমবোলা’। একসময় ভিক্টোরিয়ান যুগের বিখ্যাত ফটোগ্রাফার জুলিয়া মার্গারেট ক্যামেরনের বাড়ি ছিল এটি।
বর্তমানে, এখানে ক্যামেরন এবং অন্যান্য ফটোগ্রাফারদের ছবি প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও, এখানে প্রতি বছর ‘আইল অফ ওয়াইট’ উৎসবের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে একটি বিশেষ প্রদর্শনী হয়।
‘ডিমবোলা’-র কাছেই রয়েছে কবি টেনিসনের বাড়ি ‘ফারিংফোর্ড’। টেনিসন তার কবিতায় এই স্থানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছেন।
এই বাড়িতে কবি টেনিসনের ব্যবহৃত অনেক জিনিস আজও দেখা যায়।
আপনি যদি ইতিহাস ভালোবাসেন, তাহলে ‘কারিসব্রুক ক্যাসল’-এ যেতে পারেন। একসময় ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম চার্লসকে এখানে বন্দী করে রাখা হয়েছিল।
এখানকার পুরনো দুর্গ আর চারপাশের মনোরম দৃশ্য যে কারো মন মুগ্ধ করবে।
‘আইল অফ ওয়াইট’-এ ভ্রমণের সময় আপনি স্থানীয় খাবার চেখে দেখতে পারেন। এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়, যা আপনার ভ্রমণকে আরও আনন্দ-দায়ক করে তুলবে।
এই দ্বীপে ভ্রমণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এখানে গণপরিবহন ব্যবস্থা খুবই উন্নত। বাস অথবা ফেরিতে চড়ে আপনি খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারবেন।
‘আইল অফ ওয়াইট’-এ ভ্রমণের খরচও তুলনামূলকভাবে কম।
যদি আপনি এমন একটি ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন, যেখানে প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসা যায়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া যায়, তাহলে ‘আইল অফ ওয়াইট’ আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান