যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা, অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টা।
সৌদি আরবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে খবর, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা তৈরির লক্ষ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তবে, উভয় পক্ষের প্রত্যাশা ও দাবির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে, যা আলোচনার অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে, কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্যের কারণে সময়সীমা পিছিয়ে যেতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
এই আলোচনার মধ্যে, বিশেষ করে কৃষ্ণসাগরে নৌ-চলাচল এবং শস্য চুক্তি পুনরায় চালুর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোমবারের আলোচনায় কৃষ্ণসাগরে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে একটি সমঝোতা হতে পারে।
এছাড়াও, ইউক্রেন থেকে শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে দ্রুত কোনো সমাধানে পৌঁছানোর সম্ভাবনাকে সরাসরি নাকচ করা হয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
রাশিয়ার মূল ফোকাস থাকবে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া ২০২২ সালের কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তি পুনরায় চালু করা। এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির জন্য নিরাপদ পথ তৈরি হয়েছিল।
এদিকে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি, রুশ বাহিনী দোনেৎস্ক অঞ্চলের শ্রিবনে গ্রামটি নিজেদের দখলে নিয়েছে।
এছাড়া, ইউক্রেনীয় বাহিনী লুহানস্ক অঞ্চলের নাদিয়া গ্রামটি পুনরুদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের ছোড়া ৫৯টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তাদের হামলায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে একজন নিহত হয়েছে।
আলোচনার মধ্যে, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এর কিছু মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করেছেন এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোর বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উইটকফের এই ধরনের মন্তব্য রাশিয়ার পক্ষকে সমর্থন করার শামিল।
আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও, এটি স্পষ্ট যে উভয় পক্ষের মধ্যে এখনো অনেক অমিল রয়েছে। যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হলে উভয় পক্ষকে নমনীয় হতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান