যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের একটি বিমানবন্দরে রানওয়ের বদলে ট্যাক্সিওয়েতে (বিমান চলাচলের পথ) উড্ডয়নের চেষ্টা করা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে তা রুখে দেন একজন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার (বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক)। বৃহস্পতিবার (গতকাল) ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
খবরটি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA)। জানা গেছে, সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি নিউইয়র্কের আলবানি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।
বিমানটি রানওয়েতে (বিমান ওঠা-নামার স্থান) যাওয়ার বদলে ভুল করে ট্যাক্সিওয়েতে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকেই উড়ান শুরুর চেষ্টা করে। তখনই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে পাইলটদেরকে উড়ান বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে FAA জানায়, বিমানটি রানওয়ে ১৭আর-এর পরিবর্তে সমান্তরালভাবে থাকা এইচ ট্যাক্সিওয়েতে চলে আসে। সাধারণত, ট্যাক্সিওয়েগুলি গেট এবং রানওয়ের মধ্যে বিমান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এখানে বিমান ওঠা বা নামা করার নিয়ম নেই।
এ ঘটনার পর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার টাওয়ার থেকে পাইলটদের উদ্দেশ্যে বলেন, “৩৭৮ ফ্লাইট, থামুন! সাউথওয়েস্ট ৩৭৮, থামুন! টেকঅফ ক্লিয়ারেন্স বাতিল করা হলো।
আপনারা এইচ ট্যাক্সিওয়েতে আছেন।” এরপর পাইলটরা দ্রুত ব্রেক করেন এবং বিমানটি থামানো হয়। পাইলট জানান, তারা কন্ট্রোলারের নির্দেশ পেয়েছেন এবং বিমানটিকে থামানো হয়েছে।
সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানায়, ক্রুরা ভুল করে ট্যাক্সিওয়েটিকে রানওয়ে ভেবেছিল। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তারা ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (NTSB) সঙ্গে কাজ করছে।
FAA এবং NTSB উভয়ই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিমানটির ফ্লাইট ডেটা ট্র্যাকার ফ্লাইটরাডার২৪ (FlightRadar24) অনুসারে, ঘটনার সময় বিমানের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৮০ মাইল বা ৭০ নট।
সাধারণত ট্যাক্সিওয়েতে বিমানগুলো ঘন্টায় প্রায় ৩৫ মাইল বেগে চলাচল করে। টেকঅফের জন্য বোয়িং ৭৩৭-এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ মাইল পর্যন্ত প্রয়োজন হয়।
সৌভাগ্যবশত, এই ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং অন্য কোনো বিমানের সঙ্গেও এর সংঘর্ষ হয়নি। পরবর্তীতে, সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লাইটের যাত্রীদের অন্য একটি বিমানে করে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
সাম্প্রতিক সময়ে বিমান চলাচলে নিরাপত্তা বিষয়ক বেশ কিছু উদ্বেগের মধ্যে এই ঘটনাটি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এর আগে, গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও, কানাডাতেও একটি বিমানের অবতরণের সময় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। বিমান চলাচলের নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এবং এই ধরনের ঘটনাগুলো ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আরও একবার মনে করিয়ে দেয়।
FAA এবং NTSB-এর তদন্তের ফলাফলের দিকে এখন সবাই তাকিয়ে আছে। তথ্য সূত্র: CNN