মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা নিয়ে অবশেষে কিছুটা নমনীয়তা দেখা যাচ্ছে। বহুল আলোচিত ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে পরিচিত ২ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা হয়তো বাস্তবে রূপ নাও নিতে পারে। এমন খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসায় শেয়ার বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনো দেশ যখন অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, তখন সেই পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়। এর ফলে আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ে, যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেয়। তবে অতিরিক্ত শুল্কের কারণে ভোক্তাদের উপরও এর প্রভাব পড়ে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও, পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার নজির দেখা গেছে।
জানা গেছে, শুরুতে মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা থাকলেও, তা হয়তো পিছিয়ে যেতে পারে।
এছাড়া, বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্য বিষয়ক কিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর উপর এই শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
তবে, এই শুল্ক কত দ্রুত কার্যকর হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি।
এই খবরের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, শুল্ক আরোপের কঠোর সিদ্ধান্তগুলো হয়তো এখনই কার্যকর হচ্ছে না।
এর ফলে শেয়ার সূচক উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নমনীয়তা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
আগেও দেখা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও, পরে তা বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে।
যেমন, এর আগে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হলেও, তা বাস্তবায়নে বেশ কয়েকবার সময় পরিবর্তন করা হয়। এমনকি, কানাডা এবং মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার কারণেও শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক আরোপের বিষয়টি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এর ফলে একদিকে যেমন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হন, তেমনি ভোক্তাদের উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে, শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তগুলো দেশের অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতিপথকে প্রভাবিত করে। তাই, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নমনীয়তা বাণিজ্য নীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।
তবে, এর ফলস্বরূপ বাজারে কেমন প্রভাব পড়বে, তা সময়ই বলবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন