মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ইউনাইটেডহেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত লুইগি ম্যাঙ্গিয়নের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আবেদন করবে। মঙ্গলবার দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে ডিসেম্বরে ইউনাইটেডহেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রায়ান থম্পসনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ম্যাঙ্গিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বন্ডি জানিয়েছেন, ম্যাঙ্গিয়ন দোষী সাব্যস্ত হলে নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের অন্তর্বর্তীকালীন ইউএস অ্যাটর্নি ম্যাথিউ পোডোলস্কিকে তিনি এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আবেদন করার নির্দেশ দেবেন। ম্যাঙ্গিয়নের বিরুদ্ধে রাজ্য এবং ফেডারেল উভয় পর্যায়েই অভিযোগ আনা হয়েছে।

যদিও তিনি রাজ্যের অভিযোগের বিরুদ্ধে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ম্যাঙ্গিয়নের আইনজীবী কারেন ফ্রিডম্যান অ্যাগনিফিলো বিচার বিভাগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ম্যাঙ্গিয়নের বিরুদ্ধে একটি ফেডারেল ফৌজদারি অভিযোগে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এছাড়াও, তার বিরুদ্ধে দুটি স্টকিং এবং একটি অস্ত্র বিষয়ক অপরাধের অভিযোগও আনা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারিতে ম্যাঙ্গিয়ন তার আইনি দলের সাথে মৃত্যুদণ্ড বিষয়ক মামলার অভিজ্ঞ একজন আইনজীবীকে যুক্ত করেছেন। আভ্রাহাম মোসকোভিটজ নামের ওই আইনজীবী নিউইয়র্কে মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জনের বেশি আসামীর প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

বর্তমানে ম্যাঙ্গিয়নকে নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে ফেডারেল হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে কর্মকর্তাদের মতে, তার রাজ্যের মামলাটি প্রথমে চলবে।

ম্যানহাটনের একটি গ্র্যান্ড জুরি তার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ এনেছে। এর মধ্যে প্রথম-ডিগ্রি হত্যার একটি এবং দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যার দুটি অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও অস্ত্র ও জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দোষী সাব্যস্ত হলে ম্যাঙ্গিয়নের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এবং সম্ভবত কোনো প্যারোলের সুযোগ থাকবে না।

প্রথম-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে” ওই নির্বাহীকে হত্যা করেছেন। আইন অনুযায়ী, এর অর্থ হলো বেসামরিক জনগোষ্ঠী বা কোনো সরকারি সংস্থাকে ভয় দেখানো বা তাদের প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যার একটি অভিযোগে ম্যাঙ্গিয়নকে “সন্ত্রাসবাদের অপরাধ” হিসেবে হত্যার অভিযোগেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ডিসেম্বরে এক সপ্তাহব্যাপী ম্যানহান্টের পর পেনসিলভানিয়াতে গ্রেপ্তার হন ম্যাঙ্গিয়ন। ২৬ বছর বয়সী এই যুবকের বিরুদ্ধে পেনসিলভানিয়াতেও অভিযোগ রয়েছে।

সেখানকার একটি ম্যাকডোনাল্ডসে তাকে শনাক্ত করার পর গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একটি ‘ghost gun’ এবং একটি নোটবুক উদ্ধার করে।

যেখানে তার কথিত শিকারকে অনুসরণ করে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সম্পর্কিত লেখা ছিল।

এদিকে, ম্যাঙ্গিয়নের সমর্থনে বিপুল সংখ্যক ভক্ত এগিয়ে এসেছেন। তারা তার আইনি খরচ মেটানোর জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ৭ কোটি টাকার বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন