শিরোনাম: ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক, শুল্ক এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করবেন নেতানিয়াহু
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে যাচ্ছেন। এই বৈঠকে শুল্ক বৃদ্ধি, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আগামী সোমবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে বর্তমানে বেশ কয়েকটি জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি পণ্য আমদানির ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের ১৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত, গাজায় যুদ্ধবিরতি খোঁজার প্রচেষ্টা এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে উদ্বেগ।
নেতানিয়াহু এই বৈঠকে শুল্কের বিষয়টি ছাড়াও গাজা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা, তুরস্কের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক, ইরানের হুমকি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছে। গত নভেম্বরে আইসিসি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য নেতানিয়াহু সম্ভবত প্রথম বিদেশি নেতা যিনি ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ভালো বাণিজ্য চুক্তির উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার আগে ইসরায়েল অবশ্য মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর চেষ্টা করেছিল।
তবে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র এবং সামরিক সাহায্যের প্রধান সুবিধাভোগী ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রায় ৪০ বছর আগে দেশ দুটি একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯৮ শতাংশ পণ্য বর্তমানে শুল্কমুক্তভাবে ইসরায়েলে প্রবেশ করে।
ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সর্বশেষ শুল্ক ঘোষণার ফলে ইসরায়েলের যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, ট্রাম্পের ১০ শতাংশ শুল্ক এরই মধ্যে মার্কিন সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর ও কাস্টম গুদামগুলোতে কার্যকর হয়েছে।
এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। শুক্রবারের হিসাব অনুযায়ী, এসএন্ডপি ৫০০ সূচকের কোম্পানিগুলোর বাজার মূল্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে, যা দুই দিনের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে বড় পতন।
অন্যদিকে, আগামী বুধবার থেকে ট্রাম্পের ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উচ্চহারে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
এর ফলে চীনের পণ্যের ওপর ট্রাম্পের মোট নতুন শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫৪ শতাংশ।
তথ্য সূত্র: