যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার একটি লবন খামার থেকে সমুদ্র লবণ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ সেখানে শ্রমিক শোষণের অভিযোগ উঠেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে সিনান দ্বীপপুঞ্জের একটি প্রধান লবন খামার তাইপেং-এর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (CBP) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের কাছে এমন তথ্য আছে যা ইঙ্গিত করে যে তাইপেং-এ জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই ঘোষণার ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের সকল বন্দরে এখন থেকে তাইপেং থেকে আসা লবণের চালান আটকে দেওয়া হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার মোট লবন উৎপাদনের প্রায় ৬ শতাংশ আসে তাইপেং থেকে, যা বছরে প্রায় ১৬,০০০ টন।
দেশটির খাদ্য কোম্পানিগুলোর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার কিছুটা চাপে পড়েছে। কারণ, এর আগে কোনো বিদেশি সরকার দেশটির কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে শ্রমিক শোষণের অভিযোগে এমন ব্যবস্থা নেয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তারা আরও বলেছে, ২০২১ সাল থেকে তারা তাইপেং-এর শ্রমিকদের অবস্থা सुधारের চেষ্টা করছে এবং বর্তমানে উৎপাদিত লবণে জোরপূর্বক শ্রমের কোনো প্রমাণ নেই।
২০১৪ সালে সিনানের লবন খামারগুলোতে শ্রমিক শোষণের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। সে সময়, অনেক শ্রমিককে, যাদের অধিকাংশই ছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী, তাদের উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, দালালদের মাধ্যমে তাদের এখানে আনা হতো এবং দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করা হতো, এমনকি তাদের কোনো বেতনও দেওয়া হতো না।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন আইনজীবী চোই জং কিউ। তিনি আশা করেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার লবন খামারগুলোতে শ্রমিক শোষণের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
চোই বলেন, ২০১৪ সালে শ্রমিক শোষণের বিষয়টি সামনে আসার পর আদালত সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে এর জন্য দায়ী করেছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত শ্রমিক শোষণ পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।
২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে সরকারের প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০২১ সালে তাইপেং-এর আরও কয়েকজন শ্রমিকের ওপর নিপীড়নের খবর পাওয়া যায়, যেখানে তাদের জোর করে কাজ করানো ও বেতন না দেওয়ার অভিযোগ ছিল।
তথ্যসূত্র: Associated Press