ডগ টলমির ধারণা: প্রকৃতির জন্য প্রতিটি গজ গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বজুড়ে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য আমাদের সকলেরই সচেতন হতে হবে।
আর এই কাজটি কিভাবে করতে হবে, সে বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন একজন অধ্যাপক। তিনি হলেন ডগ টলমি।
তিনি একজন কীটতত্ত্ববিদ এবং ইউনিভার্সিটি অফ ডেলাওয়ারের অধ্যাপক। তাঁর কাজ বর্তমানে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে।
ডগ টলমি ২০০৬ সালে “Bringing Nature Home” নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বই লেখেন। এই বইয়ে তিনি স্থানীয় গাছপালা এবং পোকামাকড়ের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
তাঁর মতে, স্থানীয় পাখি ও পোকামাকড় স্থানীয় গাছের সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে। তাই তারা সেগুলোকে খাদ্য হিসেবে চেনে।
মানুষের বসতি স্থাপনের কারণে স্থানীয় গাছপালা ও তাদের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যা বন্যজীবন এবং আমাদের জন্য চরম হুমকি স্বরূপ।
এই ধারণাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য টলমি ‘হোমগ্রোন ন্যাশনাল পার্ক’ নামে একটি আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হলো: সবাই যেন তাদের বাসস্থান, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা ও বিনোদন কেন্দ্রে স্থানীয় গাছ লাগায় এবং আগ্রাসী গাছ অপসারণ করে।
সম্প্রতি, ডগ টলমি ‘How Can I Help?’ নামে আরেকটি বই লিখেছেন। এই বইটিতে তিনি বাস্তুসংস্থান সম্পর্কে মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
তিনি বুঝিয়ে বলেছেন, কীভাবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।
ডগ টলমির মতে, আমাদের আশেপাশে গাছপালা লাগানোটা খুব জরুরি। আমাদের দেশেও এমন অনেক গাছ আছে, যা স্থানীয় পাখি ও কীটপতঙ্গের খাদ্য সরবরাহ করে।
উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ গাছ, ফল গাছ, এবং আরও অনেক স্থানীয় গাছ আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ডগ টলমি মনে করেন, বাগান করা মানে শুধু সুন্দর করে সাজানো নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা।
বাড়ির আশেপাশে স্থানীয় গাছ লাগানোর মাধ্যমে আমরা জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারি।
আমাদের অনেকেরই ধারণা, স্থানীয় গাছপালা লাগালে জায়গা অপরিষ্কার দেখায়। কিন্তু ডগ টলমি এই ধারণা পরিবর্তন করতে চান।
তিনি বলেন, “বাগান করার সঠিক উপায় হলো, লনের পরিমাণ কমানো এবং সেখানে স্থানীয় গাছ লাগানো।”
ডগ টলমি আরও বলেন, “আমরা যদি আমাদের আশেপাশে স্থানীয় গাছ লাগাই, তাহলে প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করা হবে।
এর ফলে, আমাদের এলাকার বাস্তুসংস্থান উন্নত হবে, যা আমাদের সকলের জন্য ভালো।”
সুতরাং, আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের চারপাশে স্থানীয় গাছ লাগাই।
আমাদের পরিবেশকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে তুলি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস