মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্কের বোঝা আরও বাড়াতে চলেছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার থেকে এই শুল্কের হার কমপক্ষে ১০৪ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে চীন ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানা গেছে, চীনের বাণিজ্য নীতির প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে, চীন যদি মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তাহলে বুধবার থেকে চীনের পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু বেইজিং পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ায় সেই হারে আরও ৫০ শতাংশ যোগ করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, চীন আমেরিকার শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কড়া পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তিনি আরও যোগ করেন, চীন একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে চায়, তবে তারা জানে না কীভাবে এটি করতে হয়।
যদিও, শুল্ক কমানোর জন্য ট্রাম্প কী ধরনের শর্ত বিবেচনা করতে পারেন, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে উভয় দেশের শিল্পখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এর ফলস্বরূপ কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
গত বছর চীন থেকে প্রায় ৪৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্র চীনকে ১৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।
এছাড়াও, অন্যান্য দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও নতুন শুল্ক হারের মুখোমুখি হতে পারে। ট্রাম্প গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছিলেন যে, এই শুল্কের হার ১১ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে শুল্ক কমানোর বিষয়ে আলোচনা হলেও, ট্রাম্প তাঁর পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে রাজি নন। মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর লেভিট জানান, তিনি আশা করছেন এই শুল্কগুলি কার্যকর হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক হলো আমদানি করা পণ্যের ওপর ধার্য করা কর। এর ফলে আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়ে যায়, যা ভোক্তা এবং ব্যবসার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও, বাংলাদেশ সরাসরি এই বাণিজ্য যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত নয়, তবে বিশ্ব বাণিজ্যের এই ধরনের পরিবর্তনে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প, যা চীনের কাঁচামালের উপর নির্ভরশীল, তাদের উৎপাদন খরচও বেড়ে যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন