1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
May 1, 2025 1:19 PM

হার্ভার্ডের ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি সম্পদ! তবুও কেন ট্রাম্পের কোপ?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Friday, April 18, 2025,

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল পরিমাণ অর্থভাণ্ডার থাকা সত্ত্বেও কেন ফেডারেল সরকারের অর্থ কমানোর সিদ্ধান্তে তারা চিন্তিত?

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন ও শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এখন ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া নজরদারির শিকার। সম্প্রতি, ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপর একাধিক আর্থিক খড়গ নামিয়ে আনার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল ফান্ড স্থগিত করা, এমনকি তাদের অলাভজনক ট্যাক্স স্ট্যাটাস বাতিল করা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্তি বন্ধ করার মতো পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা।

জানা গেছে, এরই মধ্যে ২.২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ফেডারেল অনুদান ও চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এছাড়া, পাবলিক হেলথ স্কুল, যারা গবেষণা খাতে তিনটি ‘স্টপ-ওয়ার্ক অর্ডার’ পেয়েছে, তারাও তাদের দুইটি ক্যাম্পাস-বহির্ভূত ভবনের লিজ গুটিয়ে ফেলছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাদের প্রায় ৫৩.২ বিলিয়ন ডলারের বিশাল ভাণ্ডার (যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকার বেশি) থাকা সত্ত্বেও এই ধরনের কাটছাঁট তাদের জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ। যদিও এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তহবিল ব্যবহার করা এত সহজ নয়।

এর কারণ হিসেবে জানা যায়, এই অর্থের একটা বড় অংশ বিশেষ উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত। যেমন, শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা, শিক্ষকতার পদ তৈরি, বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম ও অন্যান্য প্রকল্পের জন্য এই অর্থ ব্যবহার করা হয়।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের পরিচালন ব্যয়ের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসে গবেষণা অনুদান এবং শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে। এমন পরিস্থিতিতে, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ তাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কারণ, হার্ভার্ড দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কিছু নীতির বিরোধিতা করে আসছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময় জরুরি পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এর কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। যেমন, যদি দ্রুত হারে তহবিল খরচ করা হয়, তবে তা একসময় ফুরিয়ে যেতে পারে।

হার্ভার্ড সাধারণত তাদের তহবিলের বার্ষিক বাজার মূল্যের ৫ থেকে ৫.৫ শতাংশ অর্থ পরিচালনা খাতে ব্যয় করে থাকে, যা ২০২৪ অর্থবছরে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত তাদের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে, এই পরিস্থিতিতে তারা তাদের তহবিল আরও গভীরভাবে ব্যবহারের কথা বিবেচনা করতে পারে। এমনটা হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের একটি বড় অংশ আসে অনুদান থেকে, যা ২০২৪ সালে তাদের মোট ৬.৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের ৪৫ শতাংশ ছিল। এছাড়া, শিক্ষা খাত থেকে ২১ শতাংশ এবং ফেডারেল ও অন্যান্য গবেষণা অনুদান থেকে ১৬ শতাংশ আয় হয়।

বর্তমানে কর্মীদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ব্যয়ের প্রায় ৫২ শতাংশ। এছাড়া, স্থান (যেমন, ক্যাম্পাস) বাবদ ১৭ শতাংশ এবং সরবরাহ ও অন্যান্য সেবা খাতে ১৯ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে হার্ভার্ডের ট্যাক্স-মুক্ত স্ট্যাটাস বাতিলেরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এমনটা হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ও দানের উপর কর বসতে পারে। ফলে, দাতাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

এছাড়াও, তারা এখন থেকে ট্যাক্সমুক্ত বন্ড ইস্যু করতে পারবে না।

অন্যদিকে, হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের উপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সাধারণত পুরো টিউশন ফি পরিশোধ করে থাকে। জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ডের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২৭.২ শতাংশই বিদেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তহবিলের অভাব হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তা কমে যেতে পারে, অথবা গবেষণার সুযোগও হ্রাস পেতে পারে। এর ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এবং সমাজের জন্য উপকারী গবেষণাগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হার্ভার্ডের পাবলিক হেলথ স্কুলের উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, ফেডারেল তহবিল কমানোর কারণে সেখানকার যক্ষ্মা বিষয়ক গবেষণা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত ৬০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ হারিয়ে গেছে।

এই মুহূর্তে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কঠিন সময় পার করছে এবং তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT