টেনিস খেলায় ডোপিং-বিরোধী নিয়মের অংশ হিসেবে খেলোয়াড়দের গোসলের সময় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা উঠেছে। আন্তর্জাতিক টেনিস ইন্টিগ্রিটি এজেন্সি (আইটিআইএ) সম্প্রতি খেলোয়াড়দের এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে যে, ডোপিং পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হলে, গোসলের সময়ও তাদের তত্ত্বাবধায়কদের (chaperone) দৃষ্টির মধ্যে থাকতে হবে।
এই নিয়মটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকজন খেলোয়াড় এবং তাদের ভক্তদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ খেলোয়াড়দের গোপনীয়তার অধিকারের পরিপন্থী।
বিশেষ করে তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য এটি খুবই অস্বস্তিকর হতে পারে। ব্রিটেনের প্রাক্তন খেলোয়াড় মার্ক পেচে সহ অনেকে এই নিয়মটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ একে ‘অশোভন’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
তবে, আইটিআইএ তাদের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, খেলোয়াড়দের ডোপিং পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এমনটা করা হচ্ছে। সংস্থাটি মনে করে, খেলার জগতে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে এই ধরনের নিয়ম অপরিহার্য।
তাদের মতে, খেলোয়াড়দের নমুনা সংগ্রহে কোনো ধরনের কারচুপি বা ভেজাল প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আইটিআইএ আরও জানিয়েছে, তারা খেলোয়াড়দের সুস্থতার দিকটিকেও গুরুত্ব দেয় এবং গোসল বা বিশ্রাম নেওয়ার জন্য তাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়।
তবে, পরীক্ষার ফলাফলের গুণগত মান বজায় রাখতে আপস করা সম্ভব নয়। বিশ্ব অ্যান্টি-ডোপিং সংস্থা (ওয়াডা)-এর নিয়ম অনুযায়ী, এই ধরনের পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা সব খেলাতেই প্রচলিত আছে, শুধু টেনিসে নয়।
খেলোয়াড়দের পরীক্ষার সময় তত্ত্বাবধায়কদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়, যাতে পরীক্ষার ফলাফলের যথার্থতা বজায় থাকে। সম্প্রতি, কিছু শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়ের ডোপিং পরীক্ষার ফল নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
তবে, আইটিআইএ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, খেলোয়াড়ের খ্যাতি, র্যাঙ্কিং বা জাতীয়তার ভিত্তিতে নয়, বরং তথ্যের ভিত্তিতেই তারা এই ধরনের মামলার সমাধান করে। এই প্রসঙ্গে, প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান স্পোর্টস অ্যান্টি-ডোপিং অথোরিটির প্রধান রিচার্ড ইনগস এক্সে (X) বলেছেন, গোসলের সময় পর্যবেক্ষণের নিয়মটি স্বাভাবিক।
তিনি আরও যোগ করেন, প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহের সময় খেলোয়াড়কে অবশ্যই নজরে রাখতে হয়, যাতে কেউ অন্য কোনো পদার্থ ব্যবহার করতে না পারে। আইটিআইএ-এর পক্ষ থেকে খেলোয়াড়দের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, তারা তাদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং পরীক্ষার সময় কোনো সমস্যা হলে, তা সমাধানে তারা প্রস্তুত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান