শিরোনাম: ডিজিটাল যুগেও সিনেমাপ্রেমীদের নতুন ঠিকানা: নিউ ইয়র্কে ফিরে এল ভিডিও স্টোর
বিনোদন জগৎ দ্রুত বদলাচ্ছে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের দৌলতে সিনেমা এখন হাতের মুঠোয়। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম-এর মতো অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলি (Online Video Platforms) দর্শকদের কাছে সিনেমার নতুন ঠিকানা হয়েছে। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগেও, নিউ ইয়র্ক শহরে একদল সিনেমাপ্রেমীর জন্য নতুন দিগন্ত খুলেছে একটি ভিডিও স্টোর – নাইট আউল ভিডিও (Night Owl Video)।
পুরোনো দিনের স্মৃতি ফিরিয়ে, ফিজিক্যাল মিডিয়ার প্রতি ভালোবাসাকে সম্মান জানিয়ে এই স্টোরটি যেন এক নতুন বিপ্লবের সূচনা করেছে।
উইলিয়ামসবার্গে অবস্থিত নাইট আউল ভিডিও-র মূল আকর্ষণ হল – হাতে ধরে সিনেমা উপভোগ করার সুযোগ।
এখানে ব্লু-রে ডিস্ক (Blu-ray Disc), ডিভিডি (DVD), এমনকি পুরনো দিনের ভিএইচএস (VHS) টেপও পাওয়া যায়।
স্টোরটির প্রতিষ্ঠাতা অ্যারন হামেল (Aaron Hamel) এবং জেস মিলস (Jess Mills)।
তাঁদের মতে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া সিনেমা উপভোগের আনন্দ ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ।
তাঁদের কথায়, “আমরা পুরনো দিনের সিনেমাপ্রেমীদের সেই নস্টালজিক অনুভূতি ফিরিয়ে আনতে চাই।”
নাইট আউল ভিডিও-তে শুধুমাত্র সিনেমা বিক্রি হয় না, বরং এটি একটি কমিউনিটি বা সিনেমা প্রেমীদের মিলন কেন্দ্র।
এখানে সিনেমা নিয়ে আলোচনা হয়, পছন্দের সিনেমা খুঁজে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
হামেল এবং মিলস দুজনেই চান, মানুষজন এখানে এসে সিনেমা নিয়ে আলোচনা করুক, নতুন সিনেমা আবিষ্কার করুক।
তাঁদের মতে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো অ্যালগরিদমের মাধ্যমে দর্শকদের জন্য সিনেমা বাছাই করে, যা অনেক সময় পছন্দের ছবি খুঁজে বের করতে বাধা দেয়।
এই স্টোরটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সিনেমার সম্ভার।
ক্লাসিক সিনেমা থেকে শুরু করে, নতুন রিলিজ হওয়া সিনেমা – সবই এখানে পাওয়া যায়।
বিশেষ করে সিনেমাপ্রেমীদের জন্য, ক্রিটেরিয়ন (Criterion), রেডিয়েন্স (Radiance), সেভেরিন (Severিন)-এর মতো বিশেষ লেবেলের সিনেমা এখানে পাওয়া যায়।
এছাড়াও, ফিল্ম বিষয়ক বই, সিনেমার পোস্টার এবং সিনেমার গানের রেকর্ডও (vinyl soundtrack) পাওয়া যায়।
তবে, নাইট আউল ভিডিও-র পথ চলা খুব সহজ নয়।
ডিজিটাল মাধ্যমের দাপটে ফিজিক্যাল মিডিয়ার বাজার এখন বেশ কঠিন।
আমেরিকাতেও গত কয়েক বছরে ফিজিক্যাল ভিডিও ডিস্কের বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
কিন্তু নাইট আউলের উদ্যোক্তারা মনে করেন, সিনেমার প্রতি মানুষের ভালোবাসা এখনো অটুট রয়েছে।
এই স্টোরটি খোলার পর থেকেই সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষজন এখানে আসছেন।
তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ব্লু-রে এবং ডিভিডি-র প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
তাঁদের মতে, পছন্দের সিনেমা কিনে নেওয়ার মধ্যে এক বিশেষ আনন্দ আছে, যা অনলাইন স্ট্রিমিং-এ পাওয়া যায় না।
নাইট আউল ভিডিও-র এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, ডিজিটাল যুগেও ফিজিক্যাল মিডিয়ার আবেদন ফুরিয়ে যায়নি।
সিনেমাপ্রেমীরা সবসময়ই চাইবেন, সিনেমার সেই পুরনো দিনের স্বাদ উপভোগ করতে, পছন্দের সিনেমা হাতে ধরে রাখতে।
নাইট আউল ভিডিও সেই সুযোগটাই করে দিচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান