1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 16, 2025 3:55 AM
সর্বশেষ সংবাদ:
বৃষ্টির তাণ্ডবে ইউএস ওপেন: রবিবার শেষ হওয়ার সম্ভাবনা? প্রথমবার বাবা হয়ে আবেগাপ্লুত চার্লি ম্যাকডাওয়েল: মেয়ের প্রতি লিলি কলিন্সের ভালোবাসার প্রকাশ! মায়ের জীবনভর সঞ্চয়: প্রেমিকের জন্য ঋণ, মেয়ের চোখে গভীর শঙ্কা! প্যারিস হিলটনের চোখে সেরা উপহার: স্বামীর পিতৃত্ব! ৯ বছরের মেয়েকে একা পার্কে পাঠালেন অন্য অভিভাবকেরা! মা’য়ের প্রতিক্রিয়া? হোটেলের কর্মীরা যা করলো, হারানো খেলনা খুঁজে পাওয়ার পর! স্তম্ভিত তরুণী! ভারতে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: ২ বছরের শিশুসহ ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু! গ্বেন স্তেফানির পিতৃ দিবসের শুভেচ্ছা: ভালোবাসায় ভরা বার্তা! স্পোর্টস বারে তরুণীকে গুলি: মৃত সন্তান, শোকের ছায়া! বিশ্বজুড়ে ‘প্রজনন সংকট’, কারণ জানালেন জাতিসংঘ!

ক্যান্সারের ওষুধ: রিভলিমাইড-এর আকাশছোঁয়া দাম!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Saturday, May 10, 2025,

জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে ঔষধের দাম: বাংলাদেশের রোগীদের জন্য এক কঠিন বাস্তবতা

ফেব্রুয়ারী মাসের এক কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে শরীরে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ঘুম ভেঙেছিল আমার। যেন কেউ ছুরি মেরেছে, এমন একটা অনুভূতি।

শুরুতে সামান্য হলেও, কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এই ব্যথা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, সোজা হয়ে দাঁড়াতেও কষ্ট হচ্ছিল।

দ্রুত হাসপাতালে গেলাম।

পরীক্ষার পর ডাক্তার জানালেন, মারাত্মক কিছু হয়েছে।

আমার শরীরে বাসা বেঁধেছে মাল্টিপল মায়োমা—এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার, যা হাড়ের মারাত্মক ক্ষতি করে।

ডাক্তার যখন জানালেন, আমার চিকিৎসার জন্য সম্ভবত “রেভলিমাইড” নামের ওষুধ ব্যবহার করতে হবে, তখন আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম।

কারণ, এই ওষুধের উৎপত্তির ইতিহাস আমার অজানা নয়।

রেভলিমাইড আসলে “থ্যালিডোমাইড”-এর একটি পরিবর্তিত রূপ।

একসময় এই থ্যালিডোমাইড ছিল আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে গর্ভবতী নারীদের ঘুমের ওষুধ হিসেবে এটি দেদারসে ব্যবহার করা হতো, যার ফলস্বরূপ হাজার হাজার শিশুর জন্ম হয়েছিল হাত-পা ছাড়াই, অথবা বিকৃত হাত-পা নিয়ে।

বিশ্বজুড়ে এই ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়।

কিন্তু ক্যান্সার প্রতিরোধের লড়াইয়ে থ্যালিডোমাইডের এই পরিবর্তিত রূপ, রেভলিমাইড এক নতুন জীবন নিয়ে আসে।

আমার জীবনসহ অনেকের জীবন বাঁচিয়েছে এই ওষুধ।

কিন্তু এখানেও রয়েছে এক গভীর বেদনা।

রেভলিমাইডের আকাশছোঁয়া দাম অনেক ক্যান্সার রোগীর জন্য এই জীবনদায়ী ওষুধকে এক দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছে।

প্রতিটি পিলের দাম প্রায় ১০০০ মার্কিন ডলার!

যদিও উৎপাদন খরচ মাত্র ২৫ সেন্ট।

এই উচ্চমূল্যের কারণে অনেক রোগী হয় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন, নয়তো ওষুধ নেওয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।

যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসা ব্যয়ের এই অসামঞ্জস্যতা নতুন নয়।

ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো কীভাবে তাদের পণ্যের দাম বাড়ায়, তা আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখেছি।

কিন্তু রেভলিমাইডের দাম শুনলে আজও বিস্মিত হতে হয়।

হাতে মসৃণ ক্যাপসুলটি নিয়ে মনে হয়, এই মুহূর্তে আমি এমন কিছু গিলতে যাচ্ছি, যার দাম একটি নতুন আইফোনের সমান!

এক মাসের ওষুধ কিনতে একটি নতুন গাড়ির (যেমন, নিশান ভার্সা) দামের সমান খরচ করতে হয়।

কিন্তু কীভাবে এই ওষুধের দাম এত বাড়ল?

কেনই বা এর দাম বাড়ছেই?

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।

এই গল্পের শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৫ সালে, কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জের একটি সমুদ্র সৈকতে।

সেখানকার এক আইনজীবী বেথ ওলমারের স্বামী, ইরা’র মাল্টিপল মায়োমা ধরা পড়ে।

চিকিৎসকেরা যখন হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন তাঁরা সন্ধান পান ড.

বার্ট বারলোগির, যিনি ক্যান্সারের চিকিৎসায় নতুন কিছু চেষ্টা করছিলেন।

ড. বারলোগি’র তত্ত্বাবধানে ইরা’র চিকিৎসা শুরু হয়।

যদিও শেষ পর্যন্ত ইরা’কে বাঁচানো যায়নি, কিন্তু তাঁর চিকিৎসার সময় থ্যালিডোমাইডের সম্ভাবনা প্রথম নজরে আসে।

পরবর্তীতে, বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেন, থ্যালিডোমাইড টিউমারের নতুন রক্তনালী তৈরি হওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।

সেই সূত্র ধরে থ্যালিডোমাইডের একটি পরিবর্তিত রূপ, রেভলিমাইডের জন্ম হয়।

কিন্তু রেভলিমাইডের বাজারজাতকরণের পেছনে ছিল এক জটিল প্রক্রিয়া।

ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি “সেলজিন” (বর্তমানে ব্রিস্টল-মায়ার্স স্কুইব)-এর মুনাফা লাভের কৌশল ছিল আকাশচুম্বী।

পেটেন্ট আইন, ওষুধের নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুন এবং রোগী সহায়তা কর্মসূচি—সবকিছু ব্যবহার করে তারা রেভলিমাইডের দাম বাড়িয়ে যায়।

সেলজিন বুঝতে পেরেছিল, ক্যান্সার রোগীদের কাছ থেকে তারা প্রায় যেকোনো মূল্য আদায় করতে পারবে।

তাই তারা ওষুধের দাম বাড়াতে থাকে।

এমনকি, কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা বোনাস পাওয়ার জন্য রেভলিমাইডের দাম বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন।

অন্যদিকে, রোগীদের জন্য উচ্চমূল্য ছিল এক বিভীষিকা।

অনেকে তাঁদের সঞ্চয় ভেঙেছেন, বন্ধক রেখেছেন বাড়ি, এমনকি প্রয়োজনীয় খাদ্য খরচও কমিয়ে দিয়েছেন।

কেউ কেউ বাইরের দেশ থেকে এই ওষুধ সংগ্রহ করতে গিয়েছেন, যদিও এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বাংলাদেশেও ক্যান্সার একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা।

সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এর চিকিৎসা উপলব্ধ হলেও, ওষুধের উচ্চমূল্য অনেক রোগীর জন্য বিরাট এক বাধা।

বিশেষ করে, যাদের মাল্টিপল মায়োমার মতো জটিল রোগ রয়েছে, তাঁদের জন্য রেভলিমাইডের মতো জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কেনা প্রায় দুঃসাধ্য।

বর্তমানে, আমার এক মাসের রেভলিমাইড-এর জেনেরিক ওষুধের দাম ১৭,৩৪১ ডলার।

যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৯ লক্ষ টাকার কাছাকাছি!

একদিকে জীবন বাঁচানোর লড়াই, অন্যদিকে এই বিশাল খরচ—যেন এক গভীর খাদ।

আসলে, ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে মুনাফা এবং রোগীর জীবন—এই দুটির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি।

সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে আরও সক্রিয় হতে হবে, যাতে বাংলাদেশের রোগীরা সুলভ মূল্যে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ পেতে পারে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT